—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলপড়ুয়াদের ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে শহরের দূষণ কমাতে চায় পুলিশ। সে জন্য পুলিশের প্রস্তাব, ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে শাটল বাস ব্যবহার করুক পড়ুয়া থেকে অভিভাবকেরা। ওই বাস তাদের স্কুলে পৌঁছে দেবে এবং স্কুল ছুটির পরে নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে ছুটির আগে বিক্ষিপ্ত ভাবে স্কুলের চার দিকে না ঘুরে প্রয়োজনে স্কুল চত্বরেই গাড়ি রাখা যায় কি না, তা-ও ভেবে দেখার প্রস্তাব দিচ্ছে তারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের বায়ু দূষণ এবং যানজটের অন্যতম কারণ বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ব্যক্তিগত গাড়ি এবং পুলকার। যানজট কমলে দূষণ কমবে। সম্প্রতি শহরে দূষণের মাত্রা কমাতে নবান্নের তরফে উচ্চ পর্যায়ের এক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার বৈঠক হওয়ার কথা আজ, বুধবার। সেখানে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত থাকার কথা লালবাজারের কর্তা এবং স্কুলগুলির প্রতিনিধিদের।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও যানজটের মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, তা নিয়ে মঙ্গলবার লালবাজারে ট্র্যাফিক পুলিশের বিভিন্ন গার্ডের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত ডিসি (ট্র্যাফিক)। সেখানে আধিকারিকদের তরফে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই প্রস্তাবগুলি নিয়েই আজকের বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা।
পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, শহরের বহু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস নেই। ফলে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ যাতায়াত করে স্কুলগাড়িতে। অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতেও স্কুলে আসে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা যাতে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার কম করেন, তার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবে। বলা হয়েছে, শাটল বাসে যাতায়াত করলে দূষণ কম হবে। পাশাপাশি কমবে স্কুল ছুটির সময়ে তৈরি হওয়া পার্কিংয়ের সমস্যাও। একই সঙ্গে যে সব স্কুল চত্বরে ভূগর্ভস্থ পার্কিং লট তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে, তা যাতে সংশ্লিষ্ট স্কুলের কর্তৃপক্ষ তৈরি করেন সেই প্রস্তাবও দিয়েছেন আধিকারিকেরা। এ ছাড়া, স্কুল ছুটির আগে সংলগ্ন এলাকার রাস্তায় পার্কিংয়ে যাতে পড়ুয়াদের গাড়ি রাখা যায়, সেই ব্যবস্থার কথাও ভেবে দেখতে বলেছেন।
সাধারণ মানুষের বড় অংশের অভিযোগ, দক্ষিণ এবং মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় স্কুল ছুটির সময়ে বিভিন্ন ক্লাসের পড়ুয়াদের গাড়ি একসঙ্গে চলে আসায় যানজট তীব্র আকার নেয়। পুলিশের তরফে বিভিন্ন ক্লাসের ছুটির সময় আলাদা করে দেওয়া হলেও এই সমস্যা থেকে নিস্তার মেলেনি। পুলিশের বক্তব্য, ছুটির অনেক আগে চলে আসা এই গাড়িগুলি দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট জায়গা না পেয়ে আশপাশের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। অনেক গাড়িকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিকল্প রাস্তায়।
এর ফলে ওই সব এলাকায় বাড়ে দূষণের মাত্রা।
এর আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতও শহরের দূষণ কমাতে বলেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে সব তরফের প্রতিনিধি উপস্থিতি থাকবেন। সেখানেই সব কিছু চূড়ান্ত হবে।