West Bengal Panchayat Election 2023

পুলিশকর্মীদের বড় অংশ গিয়েছেন ভোটের কাজে, শিয়ালদহ, উল্টোডাঙায় যানজটে নাভিশ্বাস

পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার কাজে থানার প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ কর্মী চলে গিয়েছেন। আর তার জেরে বৃহস্পতিবার থেকে বাহিনীর বাকি সদস্যেরা থানার দৈনন্দিন কাজ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্ব সামলাতে জেলার পথে পুলিশকর্মীরা। বৃহস্পতিবার উল্টোডাঙায়। ছবি: সুমন বল্লভ।

কোনও থানায় পড়ে রয়েছেন সাকুল্যে ১০ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (এএসআই)। কোথাও সেই সংখ্যাটাই টেনেটুনে ছয়, কোথাও সেই ক’জনও নেই। থানার হোমগার্ড থেকে শুরু করে কনস্টেবলের সংখ্যার হাল আরও খারাপ। যে ক’জন কর্মী আছেন, তাঁদের কখনও ভিআইপি-দের বাড়ির নিরাপত্তায় পাঠাতে হচ্ছে, কখনও রাখতে হচ্ছে দর্শনীয় স্থানের রোজকার দায়িত্বে। ফলে থানা চালাতে কার্যত বাধ্য হয়ে ‘ডবল ডিউটি’ করছেন আধিকারিকেরা। এ ভাবেই কোনও মতে শহরের নিরাপত্তার আঁটুনি বজায় রাখার চেষ্টা করা হলেও কোনও বড় ঘটনা ঘটলে কী হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশমহলের অন্দরেই।

Advertisement

ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে জেলায় ১২ হাজার পুলিশকর্মী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিল লালবাজার। থানা, ট্র্যাফিক গার্ডের পাশাপাশি ডিভিশন ধরে কর্মী ও আধিকারিকদের সংখ্যা বেঁধে দিয়ে তালিকা পাঠানো হয় লালবাজারের তরফে। পুলিশ সূত্রের খবর, থানার ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিককে ভোটের কাজে অন্য জেলায় সে ভাবে পাঠানো না হলেও ডেকে নেওয়া হয়েছে হোমগার্ড, কনস্টেবল, এএসআই, এসআইদের একটা বড় অংশকে। এর ফলে পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার কাজে থানার প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ কর্মী চলে গিয়েছেন। আর তার জেরে বৃহস্পতিবার থেকে বাহিনীর বাকি সদস্যেরা থানার দৈনন্দিন কাজ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বলে দাবি।

পরিস্থিতি সামলাতে কোনও থানায় পুলিশকর্মীদের সকালের ডিউটি শেষ করে ফের রাতে এসে ডিউটি ধরতে হচ্ছে, কোথাও আবার একই সঙ্গে দু’বেলার ডিউটি করতে হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি থানার এক দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘কিছু করার নেই! থানার কাজও তো চালাতে হবে। অর্ধেকের বেশি কর্মীকে থানা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। যে ক’জন রয়েছেন, তাঁদেরকে দিয়েই কোনও মতে কাজ চালানো হচ্ছে।’’ এমতাবস্থায় বড় কোনও ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি সামলানো যাবে কী ভাবে, সেই কথা ভাবাচ্ছে পুলিশকর্মীদেরও।

Advertisement

ভোটের জেরে একই অবস্থা ট্র্যাফিক গার্ডগুলিতেও। ভোটের কাজে গার্ডের বড় অংশের পুলিশকর্মী চলে যাওয়ায় পথের নিরাপত্তা সামলানোর দায়িত্বে থাকা কর্মীর সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছেন আধিকারিকেরা। কোথাও আবার রাস্তার ট্র্যাফিক সামলানোর দায়িত্ব বর্তেছে সিভিক ভলান্টিয়ারের উপরে। এ দিন সকাল থেকেই একাধিক রাস্তায় তুলনামূলক ভাবে কম সংখ্যক পুলিশকর্মীর দেখা মিলেছে।

ফলে দিনের ব্যস্ত সময়ে শিয়ালদহ, উল্টোডাঙা, ধর্মতলা, হাজরা মোড়, গড়িয়াহাট-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে যান-শাসনে কার্যত নাজেহাল হতে হয়েছে পুলিশকর্মীদের। ফাঁক এড়িয়ে চলেছে ট্র্যাফিক-বিধি ভাঙাও। লালবাজারের এক কর্তা যদিও বলছেন, ‘‘নির্বাচনের কাজে জেলায় বাহিনী গেলেও শহরে পর্যাপ্ত পুলিশ রয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও নজরদারি চলছে। শহরের নিরাপত্তায় ফাঁক রাখা হচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement