বিশ্বনাথ আঢ্য। ফাইল চিত্র।
মেয়ের হাতে এক প্রৌঢ়ের পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় রহস্য-জট বুধবারেও খুলল না। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিনও নানা রকম তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে অভিযুক্ত পিয়ালি। দ্বিতীয় কারও সাহায্য ছাড়া একা হাতে এক জন ব্যক্তিকে মদ্যপান করিয়ে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে বার বার নিজের জবাব বদলাচ্ছে সে।
সূত্রের খবর, এ দিন তদন্তকারীদের কাছে পিয়ালি দাবি করেছে, তার পরিচিত এক জন ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন এবং তাকে সাহায্য করেছিলেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির ফোনের টাওয়ারের অবস্থান খতিয়ে দেখে শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি। তবে তদন্তের স্বার্থে তাঁকে পিয়ালির মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এর আগেও পিয়ালি তার সঙ্গে ঘটনার দিন দু’জন ছিলেন বলে জানিয়েছিল। কিন্তু তদন্তে নেমে দেখা যায়, ওই নামে কেউ নেই। যা থেকে তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে অভিযুক্ত। তাই জেরায় একাধিক জনের নাম বলে সে পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে।
উল্লেখ্য, রবিবার ভোরে চাঁদপাল জেটির কাছে একটি পার্ক থেকে বিশ্বনাথ আঢ্যর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ। দেহের কাছ থেকে মেলে দু’টি কেরোসিনের বোতল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এটি আত্মহত্যা বলে সন্দেহ করলেও পরে তদন্তে জানা যায়, বিশ্বনাথকে পুড়িয়ে মেরেছে তার মেয়ে পিয়ালি।
তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার দিন তৃতীয় কোনও ব্যক্তি ছিলেন কি না, তা জানার জন্য পিয়ালি এবং বিশ্বনাথ কী ভাবে চাঁদপাল জেটিতে এসেছিলেন তা জানার চেষ্টা চলছে। এর জন্য ওই এলাকার সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, পিয়ালি কখনও বলছে তারা ট্যাক্সিতে এসেছিল, আবার কখনও বাসে করে আসার কথা বলছে। একই সঙ্গে চাঁদপাল জেটি সংলগ্ন এলাকায় যাঁরা রাতে থাকেন, তাঁরা ওই দিন কী দেখেছিলেন, সেটা জানার জন্য তাঁদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ। কারণ হিসেবে এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঘটনার দিন বিশ্বনাথকে নিয়ে পিয়ালি প্রথমে ওই পার্কে ঢুকছে এবং বেরিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় বার সে একা ঢুকছে। তৃতীয় বার আবার ঢুকছে বাবাকে নিয়ে। সেই সময়েই সে নিজের ওড়নায় আগুন লাগিয়ে বাবার গায়ে ছুড়ে দেয় বলে দেখা গিয়েছে ফুটেজে।’’