মঙ্গলবার রাতে যাদবপুরে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় সুইটি সূত্রধরের। ফাইল চিত্র
যাদবপুরের বাসিন্দা সুইটি সূত্রধর কী ভাবে বহুতল থেকে পড়ে গেলেন, তা নিয়ে এখনও রহস্য রয়ে গিয়েছে। বর্ষবরণের রাতে ওই বহুতলের ছাদের মধ্যিখানের একটি ফাঁকা অংশে সুইটির দেহ পাওয়া যায়। পড়ে যাওয়ার সময় ওই ফাঁকা অংশের একটি দেওয়ালে তাঁর নখের আঁচড়ও রয়েছে। পুলিশের অনুমান, পড়ে যাওয়ার সময় সুইটি পাঁচিলটি আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। অতিরিক্ত মদ্যপানের পর বুঝতে না পেরেই কি তিনি ফাঁকা অংশে পড়ে গিয়েছিলেন, নাকি তাঁকে কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, পাশের ছাদের সঙ্গে ওই বহুতলের ছাদের ফাঁকা অংশটির দূরত্ব খুবই কম। এক দিক থেকে অন্য দিকের ছাদে লাফিয়েও যাওয়া অসম্ভব নয়। সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত ছাদে সবার সঙ্গে পার্টি চলে। ওই আবাসনের বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা গভীর রাত পর্যন্ত ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত সেখানে সুইটি এবং তাঁর স্বামী কুন্তল ছিলেন। আবার কুন্তল পুলিশের কাছে দাবি করেন, তিনি একটা সময়ের পর ঘরে চলে গিয়েছিলেন। তখন একাই ছিলেন সুইটি। প্রশ্ন উঠছে, ওই রাতে সুইটি ছাদের অন্য প্রান্তে যাওয়ার জন্যে কি লাফ দিয়েছিলেন? মত্ত অবস্থায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ কি সুইটির পক্ষে করা সম্ভব?
পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ষবরণের মাঝেই গভীর রাতে একটি মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন ওই বহুতলের বাসিন্দারা। কিন্তু পুলিশ এসে কাউকে খুঁজে পায়নি। পরে সেই বহুতলের দু’টি ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা তরুণীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন।
যাদবপুরের পোদ্দারনগর এলাকার ২/২৪ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ওই বহুতলের চারতলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন কুন্তল এবং তাঁর স্ত্রী সুইটি। পুরুলিয়ার বাসিন্দা কুন্তলের পারিবারিক হোটেল ব্যবসা রয়েছে। সুইটি একটি কল সেন্টারে কর্মরতা ছিলেন। বছরখানেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। পোদ্দারনগরের এই ফ্ল্যাটে তাঁরা আসেন মাস চারেক আগে।
কুন্তলের দাবি, স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। ছাদে গিয়ে দেখা যায়, দু’জোড়া চপ্পল পড়ে রয়েছে সেখানে। পড়ে আছে কাচের গ্লাসও। ততক্ষণে চলে আসে পুলিশও। তার পর দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। তাঁকে উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।