প্রতীকী চিত্র।
সরকারি বাসের চালককে পিষে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত বেসরকারি বাসচালকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। ঘটনার ৫৩ দিনের মাথায় সোমবার শিয়ালদহ আদালতে লালবাজারের ফ্যাটাল স্কোয়াড ট্র্যাফিক পুলিশের (এফএসটিপি) তদন্তকারী দল অভিযুক্ত চালক বিজয় দে-র বিরুদ্ধে ওই চার্জশিট জমা দিয়েছে।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ পার্ট টু (জেনে বুঝে গাফিলতিতে মৃত্যু), ২৭৯ (বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো) এবং ৪২৭ (সম্পত্তির ক্ষতি করা) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, মৃত বাসচালক পূর্ণেন্দু নন্দী (৩৯) সরকারি কর্মী ছিলেন। ঘটনার দিন, ১৬ অক্টোবর তিনি এস-৩২ রুটের বাস নিয়ে বেলঘরিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। বেসরকারি বাসটি ছিল ৭৮ নম্বর রুটের। বি টি রোডের চিড়িয়ামোড়ের কাছে ওভারটেক করতে গিয়ে পূর্ণেন্দুর বাসের লুকিং গ্লাস ভেঙে দেয় বিজয়। ধাক্কা মেরে বেসরকারি বাসটি এগিয়ে গেলে পরের স্টপে সরকারি বাসটি ওই বাসটিকে আটকায়। সরকারি বাসের চালক পূর্ণেন্দু বাস থেকে নেমে গিয়ে বেসরকারি বাসচালকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ওই সময়ে বিজয় বাস নিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে পূর্ণেন্দুকে পিষে দেয়।
আদালত সূত্রের খবর, পুলিশের চার্জশিটে মেকানিক্যাল রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। যাতে বেসরকারি বাসটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না বলেই জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে দুই বাসের কন্ডাক্টর-সহ জনা দশেক যাত্রীর সাক্ষ্য জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার (টিআই প্যারেড) রিপোর্ট রয়েছে চার্জশিটে।
এক তদন্তকারী অফিসার জানাচ্ছেন, সরকারি বাসটির লুকিং গ্লাস ভেঙে গিয়েছিল। ডিপোয় বাস জমা দেওয়ার সময়ে লুকিং গ্লাস অক্ষত না থাকলে বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়াই নিয়ম। তাই ক্ষতিপূরণ চাওয়ার জন্য বাস থেকে নেমে এগিয়ে গিয়েছিলেন পূর্ণেন্দু। সেই সময়ে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টে তাঁকে ধাক্কা মারে বিজয়। সাধারণত এক জন চালক অন্য চালককে ধাক্কা মারেন না। এ ক্ষেত্রে যা হয়েছে তা দুর্লভ। তাই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রাখার দাবি জানিয়েছে পুলিশ।