বেপরোয়া: নেই হেলমেট, সওয়ারির সংখ্যাও বেশি। বর্ষবরণের রাতে এ ভাবেই দাপিয়ে বেড়াল বহু বাইক। এ জে সি বসু রোডে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছড়িয়ে রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। ডিউটিতে রয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের শীর্ষ কর্তারাও। তারই মধ্যে তীব্র গতিতে মোটরবাইক চালিয়ে চলে গেলেন এক যুবক। মাথায় নেই হেলমেট। ওই পুলিশকর্মীদের এড়িয়ে যেতে পারলেও তিনি অবশ্য খুব বেশি দূর যেতে পারলেন না। তার আগেই বাইকটি আটকালেন অন্য পুলিশকর্মীরা। নথিপত্র দেখে সন্তুষ্ট না হওয়ায় সটান চালক সমেত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে পাঠিয়ে দেওয়া হল থানায়।
উপরের চিত্রটি বর্ষবরণের রাতে পার্ক স্ট্রিটের। বড়দিনের শহরেও হেলমেটহীন বেপরোয়া চালকদের দেখা গিয়েছিল। এ বার তাঁদের আটকাতে লালবাজারের তরফে কড়া নির্দেশ পৌঁছেছিল থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিতে। সেই মতো কোনও বাইকচালক ট্র্যাফিক আইন ভাঙলেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। বাইকের নথি এবং চালকের লাইসেন্স দেখাতে না পারলে সেই বাইক বাজেয়াপ্ত করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে থানায়।
লালবাজার জানিয়েছে, পার্ক স্ট্রিট এবং তার আশপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ট্র্যাফিক পুলিশ এবং থানা একযোগে অভিযান চালিয়ে ১১৫টি বাইক বাজেয়াপ্ত করেছে। সব চেয়ে বেশি বাইক বাজেয়াপ্ত হয়েছে পার্ক স্ট্রিট, ময়দান এবং শেক্সপিয়র সরণি থানায়। উপযুক্ত নথি দেখাতে না পারায় সাউথ ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে ওই তিন থানায় ৭৭টি বাইক আটক করা হয়েছে। এ ছাড়াও ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৩০টির বেশি বাইক।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, হাজারো ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের কোনও ভাবে আটকানো যাচ্ছে না। অভিযোগ, রাতের শহরে পুলিশি অভিযান চললেও তাতে আমল দিচ্ছেন না তাঁরা। ফাঁকা রাস্তায়, বিনা হেলমেটে হু হু করে বাইক ছোটাচ্ছেন। সম্প্রতি যাঁর সাক্ষী থেকেছেন পুলিশ কমিশনার স্বয়ং। তা নিয়ে তিনি বাহিনীর অপরাধ দমন বৈঠকে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তার পরেই লালবাজারের তরফে এই ধরনের ঘটনা কড়া হাতে দমন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, বর্ষবরণের রাতে কলকাতা পুলিশের সব থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ড মিলিয়ে সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত ওই অভিযান চলে। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানোর জন্য ২১১৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে এবং মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে যথাক্রমে ১১২৮ এবং ৩১০ জনের বিরুদ্ধে।