বিধাননগরের পুরভোট ঘিরে অতীতে একাধিক বার গোলমাল-অশান্তি, বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ফাইল চিত্র।
আর আটচল্লিশ ঘণ্টা। শনিবারই বিধাননগর পুর এলাকার নির্বাচন। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় শেষ হবে প্রচার-পর্ব। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে ওই দিন পুলিশের সব ধরনের বাহিনী মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার কর্মী মোতায়েন থাকবেন বলে জানিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রচার শেষের পর থেকেই বিধাননগরের ২২টি জায়গায় নাকা তল্লাশি শুরু হয়ে যাবে। বিশেষ ভাবে নজর রাখা হবে ভাঙড় সংলগ্ন রাজারহাট, নিউ টাউন এবং সল্টলেক লাগোয়া সংযুক্ত এলাকায়। যাতে সন্দেহভাজন বহিরাগতেরা বিধাননগরে প্রবেশ করতে না পারে।
এ বারের নির্বাচনে মোট বুথ ৫২৩টি। ভোটের দিন গোলমাল সামলাতে রাস্তায় থাকবেন বিধাননগর উত্তর, নিউ টাউন এবং বিমানবন্দর ডিভিশনের পুলিশকর্তা ও আধিকারিকেরা। ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন ৩২ জন ইনস্পেক্টর। তাঁদের অধীনে থাকবেন ৪০০ জন এসআই এবং এএসআই। তাঁদের অধীনে আবার থাকবেন কনস্টেবল পদমর্যাদার ১৯০০ জন পুলিশকর্মী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে অন্য বাহিনীর মধ্যে থেকে প্রতিটি থানায় একটি করে হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড তৈরি থাকবে। তবে বাগুইআটি থানা এলাকায় ওয়ার্ডের সংখ্যা বেশি থাকায়, সেখানে এমন স্কোয়াড থাকবে দু’টি। প্রতিটি থানায় তৈরি রাখা হবে কিউআরটি এবং আরটি বাহিনীকেও।
বিধাননগরের পুরভোট ঘিরে অতীতে একাধিক বার গোলমাল-অশান্তি, বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালে শেষ পুর নির্বাচনে সল্টলেক এবং রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় ব্যাপক মারামারি হয়েছিল। বোমাও পড়ে। সল্টলেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। কৈখালির কাছে প্রকাশ্য রাস্তায় দু’টি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গুলি চলার অভিযোগও উঠেছিল সেখানে।
কমিশনারেটের কর্তারা জানাচ্ছেন, গত বিধানসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটেছে। তাই বিধাননগরের পুরভোটও নির্বিঘ্নে মিটবে বলেই দাবি তাঁদের। জানুয়ারিতে পুরভোটের ইস্তাহার প্রকাশের দিনে তৃণমূল নেতা তথা দমদমের সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছিলেন, দলের কেউ গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে দিন অতীতের ঘটনা স্বীকার করে সৌগতবাবু দাবি করেছিলেন, এ বারে তেমন কিছু ঘটবে না।
তবে পুরভোটের চরিত্র বিধানসভা কিংবা লোকসভার মতো নয়। পুরভোটে ছোট ছোট এলাকাভিত্তিক সমস্যা থাকে। ভোটের দিনে যা রাজনৈতিক টানাপড়েনের অঙ্গ হয়ে ওঠে। ইতিমধ্যেই বিধাননগরে তাদের প্রার্থীদের প্রচারে বাধা, লোকজনকে মারধর, প্রচার গাড়িতে হামলার মতো অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে তুলেছে সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার বিধাননগর কমিশনারেটে স্মারকলিপিও দিয়েছে কংগ্রেস। তবে নির্বাচন সত্যিই শান্তিপূর্ণ হল কি না, তা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার শেষ বেলা পর্যন্ত।