ফাইল চিত্র।
নিজেরই এক কর্মচারীর যোগসাজশে সম্প্রতি দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছেন পোস্তার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ওই দুষ্কৃতীরা তাঁর অফিস থেকে লুট করেছিল কয়েক কোটি টাকার সোনা। সেই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে পোস্তার সোনাপট্টির ব্যবসায়ীদের মনে। ওই এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মঙ্গলবার সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করল পুলিশ। সূত্রের খবর, বৈঠকে ছিলেন প্রায় ৬০ জন স্বর্ণ ব্যবসায়ী।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৈঠকে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, সোনাপট্টির প্রত্যেক কর্মীর পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি থানায় জমা দিতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁদের পরিবার সম্পর্কিত খুঁটিনাটিও জানাতে হবে থানাকে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পুলিশের কাছে সব রকম তথ্য থাকলে যে কেউ দুষ্কর্ম করার আগে দু’বার ভাববেন।’’ সোনাপট্টিতে কী ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা দরকার, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। অফিস বা গদির মূল দরজায় এক জন করে নিরাপত্তারক্ষীকে রাখতে বলা হয়েছে। যে কোনও বহিরাগতকে তল্লাশি করে তবেই ভিতরে ঢোকার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে।
ব্যাঙ্কের মতো সোনা ব্যবসায়ীদের অফিসে বা গদিতেও ‘প্যানিক বাটন’ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে দুষ্কৃতী-হামলা হলেই প্যানিক বাটনে চাপ দেওয়ামাত্র পুলিশের কাছে খবর পৌঁছে যায়। এ ছাড়া, ব্যবসায়ীদের ‘মোশন সেন্সর’ও লাগাতে বলা হয়েছে। অফিস বা গদি বন্ধ হওয়ার পরে কেউ দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে এই ব্যবস্থায় সতর্কবার্তা পৌঁছে যাবে মালিকের মোবাইলে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিজের অফিসে খুন হন পোস্তার সোনা ব্যবসায়ী দিলীপ গুপ্ত। লুটই ছিল খুনের মূল উদ্দেশ্য। তদন্তে জানা যায়, ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে নিহত ব্যবসায়ীর এক ‘বিশ্বস্ত’ কর্মী অঙ্কুশ গৌতম। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে উত্তরপ্রদেশের আগ্রা থেকে রূপ কিশোর, সুশীল কুমার ও কর্ণ বর্মা নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় অঙ্কুশ জানিয়েছে, রূপ তার পরিচিত। দু’জনে মিলে গত বছরের লকডাউনের সময়ে ওই সোনা লুটের পরিকল্পনা করেছিল। সেই মতো কলকাতায় এনে তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দেয় অঙ্কুশ।
তদন্তকারীরা জানান, ঠিক হয়েছিল, খুনের সময়ে অঙ্কুশ থাকবে না। সে দরজা খোলা রেখে যাবে এবং সেই সুযোগে গদিতে ঢুকে মালিককে খুন করে সোনা নিয়ে পালাবে বাকিরা। সেই মতো ঘটনার আগের দিন ভিডিয়ো কল করে অফিসের ভিতরের সব কিছু খুনিদের দেখিয়ে দেয় অঙ্কুশ। কোথা দিয়ে ঢুকতে এবং বেরোতে হবে, তা-ও বলে দেয়।