প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসছেন ব্রিগেডে। শুক্রবার মোদীকে আমন্ত্রণ জানানোর পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা জানিয়ে দিলেন আয়োজকেরা। আগামী ২৪ ডিসেম্বর কলকাতায় হতে চলা লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে হাজির থাকাই শুধু নয়, প্রধানমন্ত্রীও গলা মেলানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলেও জানিয়েছেন আয়োজকদের অন্যতম মানস ভট্টাচার্য।
রুপোর পাতের উপরে তামা দিয়ে দেবনাগরী হরফে লেখা সেই আমন্ত্রণপত্র। —নিজস্ব চিত্র।
সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন সংগঠন এবং বিজেপি এই উদ্যোগের আড়ালে থাকলেও ব্রিগেডের এই কর্মসূচি নিয়েছে ‘অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ’ নামে সংগঠন। এই সংগঠনের সঙ্গে রয়েছে বাংলার বিভিন্ন মঠ এবং মন্দির। সংগঠনের পক্ষে সভাপতি তথা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ, মানস ভট্টাচার্য, বসন্ত শেঠিয়া এবং মনোজ মণ্ডল শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় মার্গদর্শন মণ্ডলীর সদস্য স্বামী নির্গুনানন্দ মহারাজ। তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মোদী যে কলকাতার অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন, তা আগেই জানা গিয়েছিল। প্রস্তাব শুনেই প্রাথমিক কথা দিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন সংগঠকরা। রুপোর পাতের উপরে তামা দিয়ে দেবনাগরী হরফে লেখা আমন্ত্রণপত্র ছাড়াও বাংলার প্রতীক হিসাবে একটি দুর্গামূর্তি এবং শান্তিনিকেতনে তৈরি কাঁথার সেলাইয়ের উত্তরীয় দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ, সুকান্ত মজুমদার, মানস ভট্টাচার্য, বসন্ত শেঠিয়া, মনোজ মণ্ডল এবং অন্যান্য। —নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বেরোনোর পরে মানস আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, ‘‘অনেক সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি জানতে চান। তিনি গোটা সময়টাই উপস্থিত থাকতে চান বলেও জানিয়েছেন। তবে তিনি কখন আসবেন, কখন যাবেন এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে পরে জানানো হবে।’’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার পাশাপাশি মোদী নিজেও গীতাপাঠ করবেন জানিয়ে মানস বলেন, ‘‘আমন্ত্রণ পেয়ে উনি খুবই খুশি হয়েছেন। জানিয়েছেন তিনিও লক্ষ মানুষের সঙ্গে গীতাপাঠে গলা মেলাতে চান।’’
সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক মঞ্চে এই অনুষ্ঠান হবে বলেই দাবি করেছেন মানস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কমপক্ষে এক লাখ মানুষের সমাবেশ করব ঠিক করেছিলাম। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’। তবে সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন সংগঠন যে ভাবে সাড়া দিয়েছে, তাতে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ শুনতে পাবে কলকাতা।’’ এটা অতীতে বিশ্বের কোথাও কখনও হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। মানস জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকেই এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রসঙ্গত, প্রধান অতিথি হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন আয়োজকেরা। স্বামী প্রদীপ্তানন্দ বলেছিলেন, ‘‘আমরা রাজ্যে সনাতন ধর্মের যত সংগঠন, আশ্রম, সংস্থা রয়েছে সকলকেই যোগদানের আবেদন জানিয়েছি। সব রাজনৈতিক দলের সাংসদ, বিধায়কদেরও আমন্ত্রণ জানাব। সামনেই জগদ্ধাত্রী পুজো। সেটা মিটে গেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমাদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানাতে যাওয়া হবে।’’ তবে জগদ্ধাত্রী পুজোর পরে কবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পৌঁছবে তার এখনও দিন স্থির হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।