ফাইল চিত্র।
জেলা থেকে দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে আসবেন শাসক দলের কর্মীরা। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হবে। তাই ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের ন’দিন আগেই গুটিয়ে দেওয়া হয়েছে সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কের রথের মেলা। অভিযোগ, সরকারের ঘরে টাকা আটকে মেলার আয়োজনকারীদের। পুরো সময়ে বিক্রিবাটা করতে না পেরে এবং স্টলের জন্য জমা দেওয়া টাকা ফেরত না পেয়েই ফিরতে হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেককে।
দু’বছর ধরে কোভিডের কারণে অর্থনীতির এমনিই বেহাল দশা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ, তেমনই একটা সময়ে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য সেন্ট্রাল পার্কে রথের মেলা বন্ধে বাধ্য করা হয়েছে উদ্যোক্তাদের।
উদ্যোক্তাদের একটি অংশ জানিয়েছেন, ১ থেকে ২৫ জুলাই রথের মেলা হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো সল্টলেকের করুণাময়ীর বইমেলা প্রাঙ্গণ উদ্যোক্তারা নগরোন্নয়ন দফতরের থেকে বুক করেছিলেন। উদ্যোক্তাদের কারও কারও অভিযোগ, মেলা চলাকালীনই শাসক দলের প্রভাবশালী এক নেতা তাঁদের ৯ জুলাই মেলা শেষ করে দিতে অনুরোধ করেন। অনেক অনুনয় করে উদ্যোক্তারা তাঁকে রাজি করান যাতে ১২ জুলাই পর্যন্ত মেলা করতে দেওয়া হয়। আয়োজকদের এক জনের কথায়, ‘‘নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক অবশ্যজানিয়েছিলেন, যে হেতু অনেক টাকা দিয়ে ২৫ দিনের জন্য মাঠ বুক করা হয়েছিল, তাই মাঠ ছাড়ব কি না, সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা সংঘাতে যেতে চাইনি।’’
১৪ জুলাই বইমেলা প্রাঙ্গণ পরিদর্শনে আসেন তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু-সহ বিধাননগর পুরসভা ও তৃণমূল নেতৃত্ব। সংগঠনের ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘প্রতি বার রথের মেলা ২১ জুলাইয়ের আশপাশে পড়ে। ২০১৯ সালেও এমন সমস্যা হয়েছিল। এ বারে তাই ভেবেছিলাম, মেলা এগিয়ে দেব। কিন্তু সম্ভব হয়নি। সামনের বছর হয়তো মেলা এগিয়ে দেব। আমরা চাই মেলা এবং ২১ জুলাই দুটোই সুষ্ঠু ভাবে হোক।’’ কিন্তু সরকারের ঘরে থাকা মাঠ বুকিংয়ের বাকি টাকা ও বিদ্যুতের বিলের হিসেব কী ভাবে হবে, তা নিয়ে তাঁরা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর দ্বারস্থ হয়েছেন বলেও জানান দেবাশিসবাবু।
এ দিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই মেলা বন্ধ হওয়ায় মাথায় হাত ব্যবসায়ীদেরও। বিহারের ভাগলপুর থেকে আসা বিক্রেতা রাজু যাদবের কথায়, ‘‘করোনার জন্য গত কয়েক বছর কোথাও মেলা হচ্ছিল না। সংসার চালানো দায় হয়ে উঠেছিল। বিধাননগরের মেলায় স্টল করার সুযোগ পেয়ে আয়ের আশা করেছিলাম।’’ সুখেন কুমার নামে আর এক বিক্রেতার অভিযোগ, ‘‘২৫ জুলাই পর্যন্ত স্টলের টাকা আগাম দিয়েছিলাম। এখনও সেই টাকা ফেরত পাইনি।’’ মেলা বন্ধ হওয়ায় কলকাতায় আটকে পড়েছেন উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা নীলম চতুর্বেদী। তিনি জানান, তাঁদের ফেরার ট্রেনের টিকিট ২৬ জুলাই।