রানওয়েতে নেমে মাঝের দাগ বরাবরই যাওয়ার কথা বিমানের। এই লাইনকে বিমান পরিবহণের ভাষায় ‘সেন্ট্রাল লাইন’ বলে।
মঙ্গলবার দুপুরে পুণে থেকে কলকাতায় এসে নামার সময়ে স্পাইসজেটের বিমান সেই সেন্ট্রাল লাইন থেকে ডান দিকে অনেকটা সরে গেল। এতটাই বিচ্যুতি হল বিমানের যে রানওয়ের ধারে থাকা চারটি লাইট বিমানের ডান দিকের চাকার ঘায়ে ভেঙে যায়। বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে এই বিচ্যুতিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। প্রশ্ন উঠেছে, কী করে পাইলট সেন্ট্রাল লাইন থেকে এতটা সরে গেলেন? গোটা বিষয়টি নিয়ে বিমান
পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) তদন্তে নেমেছে।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন,‘‘রানওয়ের ধারের লাইট ভেঙে যাওয়ার পরে ৪৫ মিনিট রানওয়ে বন্ধ রেখে তা সারিয়ে ফেলা হয়েছে।’’
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন দুপুর ২টো ৩৩ মিনিটে। মূল রানওয়ের বিরাটির দিক থেকে বিমানটি নেমে আসে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সেই সময়ে বৃষ্টি হচ্ছিল। স্পাইসজেটের পাইলটও পরে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে জানান, তিনি বৃষ্টির মধ্যে সেন্ট্রাল লাইন দেখতে পাননি। অফিসারদের অভিযোগ, নামার আগে সেন্ট্রাল লাইন পরিষ্কার দেখতে না পেলে তা এটিসি-কে জানানোর কথা পাইলটের। এমনকি, সেন্ট্রাল লাইন দেখতে না পেলে রানওয়েতে নামার কথাই নয় পাইলটের।
কিন্তু, এ দিন স্পাইসজেটের পাইলট ১৬০ জন যাত্রী নিয়ে নেমে এসে সেন্ট্রাল লাইন ছেড়ে ডান দিকে সরে যান। সেই সময়ে বিমানের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি ছিল বলে দাবি এটিসি-র। অফিসারদের আশঙ্কা, অত গতিতে থাকার সময়ে বিমান রানওয়ের লাইট ভেঙে দেওয়ায় সেই বিদ্যুৎ থেকে বিমানে আগুন লেগে যেতে পারত। বিমানটি রানওয়ে ছেড়ে বাইরেও বেরিয়ে যেতে পারত। তবে, সে সব কিছু হয়নি। পাইলট নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার বিমান নিয়ে সরে সেন্ট্রাল লাইনের উপরে চলে আসেন এবং রানওয়ে খালি করে বেরিয়ে যান।
স্পাইসজেট তার বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে রানওয়ে ভিজে ছিল। সেই কারণে বিমান সরে গিয়েছিল। চারটি লাইট ভেঙেছে। তবে, যাত্রী ও বিমানকর্মীরা সবাই নিরাপদ রয়েছেন। তবে, এই ঘটনার পরে পাইলটকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, তার জবাব দেয়নি উড়ান সংস্থা।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রানওয়ের লাইট ভাঙার এই ঘটনা এটিসি থেকে অ্যাপ্রন কন্ট্রোলকে জানানো হয়। সেখান থেকে অফিসারেরা গিয়ে রানওয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। স্পাইসজেটের ওই বিমানের পিছনেই কলকাতায় নামার জন্য ডিমাপুর থেকে আসছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। সেই বিমানের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সেটি ঘুরে এসে পরে কলকাতায় নামে।