প্রতীকী ছবি
মানসিক সমস্যায় ভোগা এক মহিলাকে যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগ দায়ের হল পাটুলি থানায়। আক্রান্তের ভাইয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন। পুলিশের তরফে নির্যাতিতার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পাটুলির গাঙ্গুলিবাগান এলাকার একটি চারতলা বাড়ির একতলায় থাকেন অভিযোগকারী। ওই যুবকের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন তাঁর বছর একচল্লিশের দিদি। সর্বক্ষণ অস্থির হয়ে থাকছিলেন তিনি। ওই মহিলার মানসিক সমস্যার চিকিৎসাও চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। সম্প্রতি বাড়ির উপরতলার বাসিন্দা এক বছর চুয়াল্লিশের ব্যক্তির নাম শুনলেই চিৎকার শুরু করছিলেন ওই মহিলা। এমনকি, তিনি এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলেন যে সংজ্ঞাও হারাচ্ছিলেন।
ওই যুবকের কথায়, “দিদিকে যে চিকিৎসক দেখেন, তিনি এবং আমি মিলে শুক্রবার রাতে দিদির সঙ্গে বসে কথা বলি। তখন দিদি আমাদের জানায়, গত মঙ্গলবার আমার অনুপস্থিতিতে চারতলার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি আমাদের ফ্ল্যাটে যায়। সে জোর করে দিদিকে জড়িয়ে ধরে যৌন হেনস্থা করে। দিদি চিৎকার শুরু করলে ওই ব্যক্তি বেরিয়ে যায়। দিদির মানসিক অবস্থা এমনই ছিল যে, আমি ফেরার পরেও কিছু বলতে পারেনি।” যুবকের দাবি, নির্যাতিতা তাঁদের জানিয়েছেন, মহিলা একা থাকার সুযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তি আগেও এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
এর পরেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে যান অভিযোগকারী। কিন্তু অভিযুক্ত তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেয় বলে দাবি। এর পরেই পাটুলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার ভাই।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে পাঠানো হলেও ওই ব্যক্তি আসেনি। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত যুবক গাড়িচালক। তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। অভিযুক্তের পরিবারের দাবি, এমন কিছু ঘটেইনি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থার কর্মী অভিযোগকারী যুবক যদিও বলেছেন, “বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই দিদির দায়িত্ব আমার উপরে। ওই ফ্ল্যাট থেকে আমাদের তুলে দিতে নানা ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এখন আমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে এমন কাণ্ড করা হচ্ছে।” নির্যাতিতার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, “ওরা আমাদের থাকতে দেবে না। আমার সঙ্গে খুব খারাপ করেছে।”
পাটুলি থানার তদন্তকারী আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হওয়ায় ওই ব্যক্তি জামিন পেয়েছে। তবে তাঁদের তদন্ত চালু রয়েছে। অভিযুক্তের প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।