Holi celebration

আগল ভেঙে রং-আবির কেনার ধুম উত্তর ও দক্ষিণে

শহর জুড়ে উৎসব পালনের কমতি নেই। নাগরিকদের একটা বড় অংশের কাছে করোনা-বিধি না মানাই যেন দস্তুর হয়ে উঠেছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২১ ০৭:২২
Share:

বেপরোয়া: মাস্ক এবং দূরত্ব-বিধির পরোয়া না-করেই ব্রেবোর্ন রোডে চলছে রং কেনাবেচা। ছবি: রণজিৎ নন্দী

করোনার কারণে লকডাউনে গত বছরের প্রায় অর্ধেকটা সময় ঘরবন্দি থাকার স্মৃতি এখনও টাটকা। এরই মধ্যে চলতি বছরে দেশে ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। পিছিয়ে নেই এই রাজ্যও। শুক্রবার বঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৪৬ জন। মৃতের সংখ্যা চার। অথচ, শহর জুড়ে উৎসব পালনের কমতি নেই। নাগরিকদের একটা বড় অংশের কাছে করোনা-বিধি না মানাই যেন দস্তুর হয়ে উঠেছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেখা গেল আসন্ন দোল উৎসবের বাজারে।

Advertisement

দোলে মধ্য ও উত্তর কলকাতার জানবাজার, বড়বাজার, ক্যানিং স্ট্রিট, শ্যামবাজার ছাড়াও দক্ষিণে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, লেক মার্কেট-সহ একাধিক জায়গায় রঙের অস্থায়ী বাজার বসে। অধিকাংশ বাজার ঘুরে দেখা গেল, রং, পিচকিরি, মুখোশের সম্ভার নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। আর সে সব কিনতে রীতিমতো গুঁতোগুঁতি-ঠেলাঠেলি চলছে ক্রেতাদের মধ্যে। দু’তরফের প্রায় কারও মুখেই মাস্ক নেই। দেখে বোঝার উপায় নেই, করোনার চোখরাঙানি এখনও রয়েছে। আর দূরত্ব-বিধি বলে যে কিছু আছে, সেটাই যেন ভুলতে বসেছেন ক্রেতারা।

কলকাতায় রঙের বাজারগুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় জানবাজার। প্রতি বছরের মতো এ বারও সপ্তাহখানেক আগে থেকেই সেখানে রং ও আবিরের পসরা নিয়ে চলে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পিচকিরি এবং মুখোশও। সেখানে রং কিনতে এসেছিলেন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা জয়দেব পাল। বিভিন্ন রং ও পিচকিরি কিনে বাড়ি ফেরার পথে বললেন, ‘‘গত বছর করোনার ধাক্কায় নাতি-নাতনিরা রং খেলতে পারেনি। একটু আবির নিয়ে খেলেছিল। কিন্তু এ বার আগে থেকেই ওরা বায়না করছে। তাই রঙের পাশাপাশি মুখোশ নিয়ে যাচ্ছি। বাচ্চারা মুখোশ পরে রং খেলবে, কিছু হবে না।’’ যা শুনে এক পথচারীর মন্তব্য, ‘‘শেষ কয়েক দিনে করোনা কী ভাবে বেড়েছে দেখেছেন? দোলের পরে যে কী অবস্থা হবে!’’

Advertisement

জানবাজারের এক রং বিক্রেতা জালালউদ্দিন বললেন, ‘‘এ বছর তো তা-ও একটু-আধটু বিক্রি হচ্ছে। গত বছর করোনা পুরো ব্যবসা শেষ করে দিয়েছিল। তবে এ বছরে এখনও পর্যন্ত আবিরের বিক্রি বেশ কম। বিভিন্ন ধরনের মুখোশ বেশি বিক্রি হচ্ছে।’’ লেক মার্কেট এবং রাসবিহারী মোড়ে রঙের বাজারের ব্যবসায়ীরাও জানালেন, সেখানেও দেদার বিক্রি হচ্ছে রং ও পিচকিরি।

যদিও একেবারে উল্টো ছবি শ্যামবাজারের দোকানগুলিতে। সেখানে খদ্দের প্রায় নেই বললেই চলে। এক বিক্রেতা বললেন, ‘‘গত বছর করোনার ধাক্কায় ব্যবসা শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ বারও তা-ই হচ্ছে। রং বা আবিরের সে ভাবে বিক্রিই নেই।’’

তবে দোলের ক্ষেত্রেও দুর্গা ও কালীপুজোর মতো কড়াকড়ির পক্ষপাতী গড়িয়াহাটের বাসিন্দা দেবলীনা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রঙের বাজারে যা উৎসাহী লোকের ভিড় দেখছি, তাতে কড়া পদক্ষেপ করা না হলে কেউ সচেতন হবেন না।’’ আর শঙ্কিত চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘লোকজন যদি এখনও করোনার বিপদ না বোঝেন, তা হলে উৎসব মিটে গেলে আরও বড় খেসারত দিতে হতে পারে। সেটা বোধহয় কাঙ্ক্ষিত নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement