এবড়োখেবড়ো: এ ভাবেই চলছে প্রতি দিনের যাতায়াত। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
রাস্তা তৈরির নামে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পড়ে রয়েছে ইটের খোয়া আর পাথর। এর জেরে দৈনন্দিন কাজকর্মে বেরোতে গলদঘর্ম অবস্থা হয় এলাকাবাসীর। তাঁদের অভিযোগ, স্কুলগাড়ি বা অ্যাপ-ক্যাব এলাকায় ঢুকতেই চাইছে না। এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবাও পৌঁছচ্ছে না। এমনই অবস্থা বাগুইআটির জর্দাবাগানের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। এলাকা সংলগ্ন বাগজোলা বাইপাস খালের সংস্কার শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে ওই খালের পাশের রাস্তার সংস্কার।
অভিযোগ, মেরামতির নামে গত দু’মাস ধরে খোয়া বিছানো অবস্থায় রয়েছে রাস্তা। কবে সেই খোয়া ভেঙে রাস্তার কাজ হবে, তার উত্তর জানা নেই প্রশাসনের। প্রতি বর্ষায় বাগজোলা বাইপাস খাল উপচে রাস্তায় জল জমে যায়। তাই আশপাশের রাস্তায় ইট ও খোয়া ফেলে উঁচু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুরসভা। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, রাস্তা উঁচু করার নামে দিনের পর দিন খোয়া পড়ে থাকবে কেন?
তাঁদের অভিযোগ, সব থেকে খারাপ অবস্থা রবীন্দ্রপল্লির ‘বারো ফুট’ রাস্তার। মাসের পর মাস ধরে সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে ইট ও খোয়া। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগেই ‘বারো ফুট’ রাস্তার সামনের একটি বাড়ির বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে হয়েছিল। কিন্তু রাস্তার এমন হাল থাকায় সেখানে ঢুকতে পারেনি অ্যাম্বুল্যান্স। লাটে উঠেছে বয়স্কদের সকাল-সন্ধ্যা ভ্রমণও।
শুধু এলাকাবাসীরাই যে ভুগছেন তা নয়, ‘বারো ফুট’ রাস্তা দিয়ে ভিআইপি রোডের জোড়ামন্দির এলাকা থেকে জ্যাংড়ার দিকে কম সময়ে পৌঁছতে অন্যেরাও এ পথ ব্যবহার করেন। মূল রাস্তায় যানজট থাকায় এই রাস্তার গুরুত্ব বেড়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। ফলে দিনের পর দিন এ ভাবে খোয়া পড়ে থাকায় অসুবিধায় পড়ছেন অসংখ্য মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য আশঙ্কা আরও একটি। খোয়া ফেলে রাস্তা উঁচু করতে গিয়ে বাড়িগুলি নিচু হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। কারণ এখনই রাস্তা এবং বাড়িগুলি প্রায় সমান সমান। ফলে বর্ষায় অবস্থা আরও সঙ্গিন হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
স্থানীয় কাউন্সিলর সন্দীপ বাগুই জানিয়েছেন, ওই সব খোয়া ছড়ানো রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হয়ে যাবে। সন্দীপবাবু জানান, ৬০ শতাংশ রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। এই রাস্তাগুলির সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট হয়ে গিয়েছে। বর্ষা শুরুর আগেই কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, ‘‘রাস্তা উঁচু হচ্ছে এলাকায় জল না দাঁড়ানোর জন্যে। জলই যদি রাস্তায় না দাঁড়ায়, তবে তা বাড়িতে ঢুকবে কী ভাবে!’’
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, বর্ষা আসতে এখনও চার মাসের বেশি। তত দিন কি এই রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হবে?