Night Curfew

Night Curfew: ১০ দিন পর কলকাতায় ফিরল রাতের কার্ফু, সঙ্গী শহর জুড়ে বিধিভঙ্গ

সেই সঙ্গে বেপরোয়া বাইক বাহিনীর দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। পুজোর ক’দিন রাত যত বেড়েছে, পথের বিধিভঙ্গের চিত্র ততই প্রকট হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৬:১৪
Share:

অমান্য: কার্ফু ভেঙে শ্যামবাজারে আড্ডা। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

উৎসবের জন্য ১০ দিনের বিরতির পরে শহরে ফিরল রাতের কার্ফু। কিন্তু বিধিভঙ্গের চিত্রটা বদলাল কি? বৃহস্পতিবার ফের কার্ফু শুরুর রাতে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে খোঁজ করে জানা গেল, মানুষকে রাতভর বিধি মানাতেই হিমশিম খেয়েছে পুলিশ। ধরা পড়ে অনেকেরই দাবি, রাতের কার্ফু যে শুরু হচ্ছে, তা জানতেনই না তাঁরা!

Advertisement

করোনা রোগীর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত গত বছরের তুলনায় কম থাকলেও পুজোর মুখে রাতের কার্ফু তুলে দেওয়ার ফল কী হতে পারে, তা নিয়ে জোর চর্চা চলেছে। পুলিশকর্তাদের একটি অংশও মনে করছেন, নৈশ কার্ফু তুলে দেওয়ার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। কারণ পুলিশের দাবি ছিল, মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখলেও এই সিদ্ধান্ত মানুষকে রাস্তায় বেরোতে উৎসাহিত করবে। যার ফল হতে পারে মারাত্মক। পুজোয় সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। মণ্ডপের বাইরে এবং রাস্তায় দেখা গিয়েছে বিধি ভাঙার রোজনামচা।

সেই সঙ্গে বেপরোয়া বাইক বাহিনীর দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। পুজোর ক’দিন রাত যত বেড়েছে, পথের বিধিভঙ্গের চিত্র ততই প্রকট হয়েছে। কোথাও হেলমেট ছাড়াই এক বাইকে সওয়ার হয়েছেন তিন জন। কোথাও গতির তুফান তুলে একাধিক মোটরবাইক পরস্পরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর পুজোয় যত মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা ছিল অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে তৃতীয়া থেকে দশমীর মধ্যে যেখানে দিনে গড়ে একশোটি বাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেখানে এ বছর তৃতীয়া থেকে পঞ্চমীর মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ১৩০০-র বেশি বাইকের বিরুদ্ধে! দশমী থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পার্ক স্ট্রিটে বাইকচালককে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

এই প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার থেকে ফিরেছে নৈশ কার্ফু। বিধি মনে করাতে শ্যামবাজার, উল্টোডাঙা, ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট, হাজরা, গড়িয়াহাট, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, পার্ক সার্কাসের মতো বড় বড় রাস্তার মোড়ে চলেছিল নাকা তল্লাশি। কিন্তু ১১টার পরেও দেখা গিয়েছে গাড়ির যাতায়াত।

ধর্মতলা মোড়ে হেলমেটহীন এমনই একটি বাইকবাহিনীকে দাঁড় করানো হলে বলতে শোনা যায়, রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন তাঁরা। রেস্তরাঁ রাত দেড়টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে শুনে তাঁরা ভেবেছিলেন নৈশ কার্ফু নেই। হেলমেট না থাকা প্রসঙ্গেও কোনও যুক্তি দেখাতে পারেননি ওই যুবকেরা। পার্ক স্ট্রিটের কাছে আবার তারস্বরে গান বাজাতে বাজাতে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা একটি গাড়ি থামিয়ে রাত আড়াইটে নাগাদ পুলিশ দেখে, ভিতরে চালক ছাড়াও চার জনের আসনে বসে সাত জন! প্রত্যেকেই নেশাগ্রস্ত। তাঁদের দাবি, দিনকয়েকের মধ্যেই কর্মস্থলে ফিরে যাবেন। তাই মজা করতে বেরিয়েছেন।

ইএম বাইপাসে নাকা-তল্লাশির সময়ে ধরা পড়া এক যুগলের প্রশ্ন, ‘‘অকারণে মানুষের আনন্দ কেড়ে নিতে কেন আবার কার্ফু জারি হল?’’ পার্ক সার্কাস ও শরৎ বসু রোডের একাধিক রেস্তরাঁ-পানশালার সামনে পুলিশকে শুনতে হয়েছে, ‘‘কালীপুজোর আগেই তো রাতের কার্ফু তুলে নেবেন। তা হলে কড়াকড়ি করে কী লাভ?’’

ট্র্যাফিক বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘মানুষকে বিধি মনে করাতে থানার তরফেই নাকা-তল্লাশি করা হয়েছে। ফের কার্ফু তুলে নেওয়ার কোনও খবর এখনও নেই। তবে কার্ফুর উদ্দেশ্য যে সংক্রমণ লাগামছাড়া হতে না দেওয়া, সেটা সাধারণ মানুষকেই বুঝতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement