ভিটেছাড়া: বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বার করে আনছেন দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
২০১৯-এর পরে ২০২২। মেট্রোর কাজের জন্য বার বার বৌবাজার এলাকার বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় অসুরক্ষিত হয়ে পড়ছে পানীয় জল ও নিকাশির ব্রিটিশ আমলের পাইপলাইন। এমনই মত কলকাতা পুর আধিকারিকদের অনেকের।
বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়ে ২০১৯ সালে দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের প্রায় ৪৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার রাতে ১৪টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দুর্গা পিতুরি লেনের একাংশ এবং একাধিক ম্যানহোল বসে গিয়েছে। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে-র অভিযোগ, ‘‘২০১৯-এর বিপর্যয়ের পরে এলাকায় জল, নিকাশি ও রাস্তার দফারফা হয়েছিল। পুরসভাকে এখানে কিছু কাজ করতে গেলেই মেট্রোর থেকে এনওসি নিতে হয়। তাতে পরিষেবা বাধা পাচ্ছে।’’
আজ, শুক্রবার কলকাতা পুর ভবনে কেএমআরসিএল-এর সঙ্গে পুরসভার বৈঠক হবে। যার নেতৃত্ব দেবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে ঘরছাড়াদের ফেরার বিষয়টিও সেখানে গুরুত্ব পাবে বলেই দাবি। উল্লেখ্য, মাসখানেক আগে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এই প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন কাউন্সিলর বিশ্বরূপবাবু।
বৃহস্পতিবার এলাকা পরিদর্শনে এসে মেয়র বলেন, ‘‘পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং)-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এখানকার বাড়িগুলি বিপজ্জনক। বছর তিনেক আগেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। ডিজি (বিল্ডিং)-এর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যেরা বাড়িগুলি পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেবেন। তা নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসব। কেএমআরসিএল, রেলও থাকবে।’’ মেয়র জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের যাতে হোটেলে সুষ্ঠু ভাবে রাখা হয়, তা নিয়ে কেএমআরসিএল-এর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।
এ দিন দুর্গা পিতুরি লেনে গিয়ে দেখা গেল, পুরনো বাড়িগুলি আগাছায় ভরেছে। রাস্তার অবস্থা বেহাল। ঘরছাড়াদের অধিকাংশেরই অভিযোগ, ‘‘আগাছা কাটতে কেএমআরসিএল-কে বার বার বলেও লাভ হয়নি।’’ বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এ বারের বিপর্যয়েও জল ও নিকাশির লাইনের ক্ষতি হয়েছে। কারণ, বুধবার রাতেই দুর্গা পিতুরি লেনে পানীয় জলের লাইন থেকে নোংরা বেরিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। কেএমআরসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) এ কে নন্দীর অবশ্য দাবি, ‘‘আমাদের কাজের জন্য পুরসভার নিকাশি এবং জলের লাইনের কোনও বিপত্তি হয়নি।’’