প্রতীকী ছবি।
সরকারের খাতায়কলমে রুটের অস্তিত্ব থাকলেও রাস্তায় বাসের দেখা নেই। রুটের নাম, গন্তব্য-সহ অন্যান্য তথ্য বাসের গায়ে লেখা থাকলেও আদতে বাস চলছে মূল রুটের বাছাই অংশে, সেখানে লাভ সবচেয়ে বেশি। অনেকটা অটোর ধাঁচেই এ বার সরকারি অনুমতিপ্রাপ্ত রুট ভেঙে বাস চালাচ্ছেন বাসমালিকদের একাংশ। সরকারি নজরদারির ফাঁকফোকর গলে এ ভাবেই কাটা রুটে ছুটছে বহু বেসরকারি বাস। ফলে ভোগান্তি চরমে যাত্রীদের।
অভিযোগ, রুটের যে অংশে যাত্রী বেশি, সেখানে বাসের সংখ্যা অনাবশ্যক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে রেষারেষি। এ ভাবে কাটা রুটে বাস চলার জন্য স্থানীয় স্তরে নানা যোগসাজশকেও দুষছেন
যাত্রীরা। রাজ্যের বিভিন্ন বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব এ নিয়ে ওয়াকিবহাল হলেও বিভিন্ন রুটের উপরে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, শহরতলির একাধিক রুটের বাস শুধু হাওড়া-শিয়ালদহের রুটে চলাচল করছে। একই অভিযোগ বাইপাসের একাধিক রুট নিয়েও। অভিযোগ, হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক আসার বদলে ৭১ নম্বর রুটের বাস শিয়ালদহ হয়ে রাজাবাজার পর্যন্ত গিয়ে ফেরার পথ ধরে। ৪৭/১ রুটের বাস টালিগঞ্জ থেকে সল্টলেকে যাওরা বদলে যাত্রা শেষ করে শিয়ালদহ সংলগ্ন রাজাবাজারে। ২৩৫
রুটের বাস আমতলা থেকে বেহালা, জোকা হয়ে সল্টলেক যাওয়ার পরিবর্তে থেমে যায় রাজাবাজারেই। দক্ষিণ শহরতলির ৮০এ রুটের বাসগুলির গড়িয়া থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত আসার কথা। কিন্তু অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই অধিকাংশ বাস বন্ধ হয়ে যায়। যে কয়েকটি চলে, তারা দৌড় শেষ করে হাজরায়।
রাজারহাট-নবান্ন রুটের অধিকাংশ বাসই নবান্নের বদলে ধর্মতলা থেকে ফেরার পথ ধরে। কেবি-২১ রুটের বাসগুলিও পার্ক সার্কাস থেকে লেক টাউন পর্যন্ত আসার বদলে থেমে যায় রাজাবাজারে।
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, পথে বাস কম থাকার অভিযোগ পেয়ে ২৮ অক্টোবর বাসমালিক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিয়ে তথ্য তলব করা হয়। কোন রুটে কত বাস চলছে, তা জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু ১০ দিন পরেও সেই তথ্য জমা পড়েনি বলে
অভিযোগ। সোমবার ফের তথ্য তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে বাসমালিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের আরটিএ-র চেয়ারম্যানের সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
তবে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলছেন, ‘‘কিছু রুট সরকারি নিয়ম মানছে না। নিজেদের মতো করে বাস চালাচ্ছে। এই প্রবণতা বিপজ্জনক।’’ ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের’ সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘বাস কোথায় কী ভাবে চলছে, তা নজরদারির দায়িত্ব সরকারের। তাতে ফাঁক থাকায় এই পরিস্থিতি।’’ পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’