কলকাতার উত্তর-দক্ষিণ (ব্লু লাইন) মেট্রো। — ফাইল চিত্র।
এই প্রথম শহরের দু’টি পৃথক মেট্রোপথ কাছাকাছি চলে আসবে একটি স্টেশনের মাধ্যমে। কলকাতার উত্তর-দক্ষিণ (ব্লু লাইন) মেট্রো এবং নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রো (অরেঞ্জ লাইন) আদতে জুড়ে যাবে নিউ গড়িয়া সংলগ্ন কবি সুভাষ স্টেশনের মাধ্যমে। ভিন্ন দুই মেট্রো শাখার একই স্টেশন হওয়ায়এক লাইন থেকে অন্য লাইনে যাতায়াত মসৃণ করতে বিশেষ পদক্ষেপ করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যাত্রীরা টোকেন বা স্মার্ট কার্ড এক বার পাঞ্চ করেই অন্য দিকের মেট্রোয় সফর করতে পারবেন। এই ব্যবস্থার ফলে নতুন করে আর টোকেন কেনার হ্যাপা থাকবে না। যাত্রীদের ভাড়া এবং সময়, দুটোই বাঁচবে। এর জন্য নিউ গড়িয়া সংলগ্ন কবি সুভাষ স্টেশনে যাত্রীদের পৃথক ভাবে যাতায়াতের সাবওয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য মেট্রোর স্মার্ট গেটের সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেল তথা কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। রেলের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ক্রিস’ (সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন অ্যান্ড সিস্টেম) এই কাজ করছে বলেমেট্রো সূত্রের খবর। শহরতলির ট্রেনে এই সুবিধা থাকলেও কলকাতার মেট্রোয় এমন ব্যবস্থা এই প্রথম। যদিও মেট্রোর ভাড়া আদায়ের পদ্ধতি স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় রেলের তুলনায় প্রক্রিয়াটি অনেকটাই জটিল। দুই মেট্রো রুটের বিভিন্ন স্টেশনের মধ্যে সংযুক্ত ভাড়ার হিসাব করতে হচ্ছে। পাশাপাশি, নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথের পাঁচটি স্টেশনের জন্য ভাড়ার তালিকা চূড়ান্ত করতে রেল বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। তবে, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হলে, এক বার টোকেন বা স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেই যাত্রীরা রুবি থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যেতে পারবেন। তাতে তাঁদের সময় এবং অর্থ, দু’য়েরই সাশ্রয় হবে। নতুন ভাড়ার অঙ্ক খুব বেশি হবে না বলেই মেট্রো সূত্রের খবর।
কৌশিক বলেন, ‘‘মেট্রোর সম্প্রসারণের সঙ্গে ধাপে ধাপে এই ব্যবস্থা আরও বেশ কয়েকটি স্টেশনে চালু হবে।’’ নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো সল্টলেক পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে পরের ধাপে সেক্টর ৫ স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথে যাত্রী পরিষেবা শুরু করার আগে এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গত ৩০ জানুয়ারি রেলওয়ে সেফটি কমিশনার খতিয়ে দেখেন। কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা গত শুক্রবার জানান, নতুন মেট্রোপথে পরিষেবা শুরু করার ছাড়পত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁরা পেয়ে যাবেন বলে আশা করছেন।
ইতিমধ্যেই নিউ গড়িয়া এবং রুবির মধ্যে বিভিন্ন স্টেশনে কর্মী ও আধিকারিকদের বদলি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যেই পরিষেবা শুরু করার বিষয়ে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন মেট্রো রেলের জিএম।