দুর্ভোগ: দীর্ঘ যানজটে অবরুদ্ধ গতি। ছবি: সুদীপ ঘোষ
সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড়ি ফেরার জন্য টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর অটো স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন হরিদেবপুর কেওড়াপুকুরের সুমিতা চক্রবর্তী। প্রায় ৪০ মিনিটের উপর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে অটো পান তিনি। কিন্তু মাত্র কিছুটা দূরে গিয়েই ঘোষপাড়ায় দাঁড়িয়ে পড়ল অটো। সামনে দীর্ঘ যানজট। সেখানে গেল আরও আধ ঘণ্টা। ১৫-২০ মিনিটের রাস্তা পেরোতে সময় লেগে গেল
ঘণ্টা খানেক!
সুমিতা তাও অটো পেয়েছিলেন। কিন্তু সোদপুরের বাসিন্দা অমিত সরকার তো প্রায় ঘণ্টা খানেক লাইনে দাঁড়িয়েও অটো পাননি। কারণ রাস্তায় এত যানজট যে চালকেরা রাস্তা ফাঁকা না হওয়া পর্যন্ত আর ওই রুটে যাবেন না। টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে ঠাকুরপুকুর মোড় পর্যন্ত মহাত্মা গাঁধী রোডের এই ছবি কিন্তু নতুন কিছু নয়।
তথ্য বলছে, ২০১১ সালের আগে এই এলাকা রাজ্য পুলিশের অধীনে ছিল। পরে কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত হলেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বরং আরও খারাপ হয়েছে। কারণ, কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি মেট্রোর সম্প্রসারণের ফলে হরিদেবপুর, কবরডাঙা, ঠাকুরপুকুর সংলগ্ন এই এলাকায় জনবসতির চাপ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। কিন্তু রাস্তা চওড়া হয়নি। ফলে সকাল, বিকেল কিংবা সন্ধ্যা — সব সময়েই যানজটে পড়ে তাঁদের নাকানি-চোবানি খেতে হচ্ছে— অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো যোগ হয়েছে সিরিটি-বেহালার রাস্তায় জল এবং জল নিকাশির রাস্তার কাজ। এতে ওই রাস্তা বন্ধ থাকায় তার চাপ এসে পড়েছে মহাত্মা গাঁধী রোডে।
তবে শুধু একটা সমস্যাই নয়। অভিযোগ, এই রাস্তার উপরে রয়েছে কেওড়াপুকুর এবং কবরডাঙার মাছ এবং সবজির পাইকারি বাজার। বাজারের জিনিসপত্র নামানো-ওঠানো ছাড়াও অনেক দোকান বসে রাস্তার উপরেই। ফলে এই দুই জায়গায় রাস্তা এমনিতেই অনেকটা সরু হয়ে গিয়েছে। অথচ গাড়ির সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে। আর তাতেই ভোগান্তি চরমে উঠেছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
অভিযোগ, এত যানজট হওয়ার পরেও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের কোনও কর্মীকে ওই রাস্তায় দেখতে পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র করুণাময়ী মোড় এবং ধারাপাড়াতেই ট্রাফিক পুলিশকে দেখতে পাওয়া যায়। বাকি রাস্তায় কোনও পুলিশকর্মীই থাকেন না।