চূড়ান্ত যাত্রী দুর্ভোগের শিকার যাত্রীরা। —ফাইল চিত্র।
অ্যাপ-ক্যাব ধর্মঘটের প্রথম দিনে চূড়ান্ত যাত্রী দুর্ভোগের শিকার হল কলকাতা। বেহালা থেকে বেলেঘাটা, গড়িয়া থেকে দমদম— সর্বত্রই একই চিত্র।
অনেকেরই অ্যাপে ক্যাব বুকিং হওয়ার পর তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই ক্যাব বুক করার পর গাড়ি পেতে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগবে বলে জানানো হয়। তার পরেও ক্যাব আসেনি বলে অভিযোগ। অনেক যাত্রী আবার ক্যাব পেলেও আন্দোলনকারীরা মাঝপথে তাঁদের গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ এসেছে। সোমবার সকালে ধর্মতলায় একটি অ্যাপ-ক্যাব থেকে যাত্রীদের নামিয়ে তা ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে।
সমস্যায় পড়েন দূরপাল্লার ট্রেনে কলকাতায় নামা যাত্রীরাও। শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে অ্যাপের মাধ্যমে ক্যাব বুক করতে পারেননি অমেকেই। যদিও হলুদ ট্যাক্সিতে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে কলকাতা পুলিশকে। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় এ দিন হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যাও ছিল কম। সুযোগ বুঝে অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়াও বেশি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোথাও দুই থেকে তিন গুণ ভাড়া নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
অ্যাপে ক্যাব বুকিং হওয়ার পরও বাতিল হয়ে গিয়েছে অনেকের।
আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কা শর্মা-কাণ্ডে ফের ধাক্কা রাজ্য সরকারের, আদালত অবমাননার নোটিস ধরাল সুপ্রিম কোর্ট
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ অ্যাপ-ক্যাবে হাওড়া থেকে বেহালার ভাড়া দেখাচ্ছিল ৭২৮ থেকে ৮০০ টাকা। অফিস টাইমেও যা ৫০০ টাকার বেশি হয় না। শিয়ালদহ থেকে উল্টোডাঙার ভাড়া ওই সময়েই দেখাচ্ছিল সাড়ে তিনশো থেকে ৪০০ টাকা। গড়িয়া থেকে ধর্মতলার ভাড়া ছিল ৩০০ টাকার আশপাশে। চাঁদনি থেকে শ্যামবাজারের ভাড়া ওই সময়ে ২৩৫ টাকার বেশি। সব ক্ষেত্রেই ওয়েটিং আধ ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু বুকিং করতে গেলেও সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির তরফে বুকিং করার সময় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, গাড়ি কম তাই ভাড়া অত্যন্ত বেশি।
চালকদের প্রাপ্য বাড়ানোর দাবিতে অ্যাপ-ক্যাব পরিষেবা দু’দিন বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’। চালকদের অভিযোগ, বেশি ভাড়া নিয়ে মুনাফা লুটছে সংস্থাগুলি। কিন্তু তাঁদের প্রাপ্য দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। এমনকি পুলিশও তাদের ‘অহেতুক’ জরিমানা করে বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে এই ধর্মঘট।
আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিপাত, বাতিল বহু ট্রেন, ট্রাফিক জ্যাম, জল থই থই মুম্বইয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, এই সব সমস্যা নিয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তার পরেও যে কে সেই অবস্থা। আপাতত দু’দিনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এই ধর্মঘটে শামিল হয়েছে ল্যাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনও। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে হলুদ ট্যাক্সির একাংশের চালকরাও শামিল হবেন বলে জানা গিয়েছে। ফলে আরও দুর্ভোগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে মঙ্গলবার।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।