অফিসে যাওয়ার ব্যস্ত সময়ে আচমকাই থমকে গেল মেট্রো পরিষেবা। বুধবার সকালে কলকাতা মেট্রোর রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের কাছে লাইনে ঝাঁপ দেন এক যাত্রী। তাঁর দেহ পাওয়া যায় রবীন্দ্র সরোবর এবং মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনের মাঝামাঝি। এর পরেই সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ পাওয়ার ব্লক করে আংশিক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় মেট্রো রেল পরিষেবা। ঠিক ৪৫ মিনিট পর আবার তা চালু করা হয়। তবে নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, পরিষেবা চালু হলেও সকাল সওয়া ১১টা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। প্রায় প্রতিটি স্টেশনেই ২ মিনিটের বদলে অন্তত ৫-৭ মিনিট দাঁড়িয়েছে এক একটি ট্রেন।
ময়দানের পর থেকে ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধই ছিল ৪৫ মিনিট। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, দক্ষিণেশ্বর ময়দান স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো রেল স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। যদিও যাত্রীদের দাবি, ট্রেন চলচলেও পরিষেবা ছিল অত্যন্ত ধীরগতি। তিন-চারটি স্টেশন পেরোতে ২০ মিনিট লেগে গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, সকাল ৯টা ৪৭ মিনিট নাগাদ মেট্রোর এক মোটরম্যান একটি দেহ দেখতে পান মহানায়ক উত্তমকুমার মেট্রো স্টেশন এবং রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের মাঝামাঝি। তিনিই বিষয়টি জানান মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে। খবর পাওয়ার পরই মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুরু হয় দেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করে পরিষেবা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। সেই মতো সকাল ১০টা ৫৯ মিনিটে আবার চালু করা হয় আপ-ডাউন স্বাভাবিক মেট্রো পরিষেবা। তবে মেট্রো লাইনে পাওয়া ওই দেহ নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
মেট্রোলাইনে পাওয়া ওই দেহটি কার? তাঁর পরিচয় কী, তা জানা যায়নি এখনও। দেহটি কোথা থেকে সেখানে এল, তা-ও স্পষ্ট নয়। মেট্রো সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে দেহটি কোনও স্টেশনের কাছাকাছি ছিল না। পড়েছিল দু’টি স্টেশনের মাঝে। তাই ঘটনাটি আদৌ মেট্রোয় আত্মহত্যার ঘটনা কি না সে ব্যাপারেও এখনও পর্যন্ত মেলেনি কোনও নিশ্চয়তা। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুরোটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি ঘটনাটি আত্মহত্যার হয়েও থাকে, তবে মেট্রো স্টেশনের সিসিটিভি নজরদারি এড়িয়ে কখন ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।
বুধবার সকালের এই ঘটনায় দিনের ব্যস্ত সময়ে ময়দানের পর থেকে ডাউন লাইনের মেট্রো পরিষেবা আংশিক বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা। নিত্যযাত্রীরা জানান, তাঁরা কেউ অফিস, কেউ স্কুল-কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু মেট্রোর এই দুর্ঘটনার জেরে প্রত্যেকেরই গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাবে।