n সতর্কতা: পোস্তা উড়ালপুলের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি সরানোর জন্য প্রচার পুলিশের। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
পাঁচ বছর আগে নির্মাণকাজ চলার সময়েই ভেঙে পড়েছিল উড়ালপুলের একটি অংশ। তার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় কাজ। এত দিন পরেও অবশ্য ওই উড়ালপুল ভেঙে ফেলা হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি রাজ্য সরকার। গত পাঁচ বছর ধরে কার্যত একটি ভগ্নস্তূপের মতো দাঁড়িয়ে আছে পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুল। এ বার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগমনবার্তা পেতেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই উড়ালপুলের নীচের রাস্তা থেকে গাড়ির পার্কিং সরিয়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেছে কেএমডিএ।
আগামী কাল, বুধবার ওই ঘূর্ণিঝড়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও আজ, মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই বিবেকানন্দ উড়ালপুলের নীচ থেকে পার্কিং সরিয়ে দেওয়া হবে। ওই উড়ালপুলের যে অংশে ঢালাই হয়েছে, ঝড়ের সময়ে যাতে সেই অংশের নীচ দিয়ে কেউ যাতায়াত করতে না পারে, তা দেখার জন্য পোস্তা থানা, জোড়াবাগান থানা এবং হাওড়া সেতু ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা ওই উড়ালপুলের নীচের অংশ পরিদর্শন করতে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশের আধিকারিকেরাও। পরিদর্শনের পরে কেএমডিএ-র কর্তারা ঠিক করেন, কোন কোন এলাকায় আজ থেকে ‘নো পার্কিং’ বলবৎ করা হবে। ঠিক হয়েছে, উড়ালপুলের যে অংশে ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে, তার নীচের রাস্তায় কোনও গাড়ি দাঁড়াবে না মঙ্গলবার থেকে। ওই অংশে ‘নো পার্কিং’ বোর্ড লাগানো হবে। ঝড়ের সময়ে এলাকার লোকজন যাতে উড়ালপুলের নীচে না যান, তার জন্য পুলিশ গোটা পোস্তা এলাকায় মাইকে প্রচার করেছে। এলাকার বাসিন্দাদের অবশ্য দীর্ঘ দিনের দাবি, ওই উড়ালপুলটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হোক। কেএমডিএ-র এক প্রতিনিধি জানান, নির্মাণ চলাকালীনই বন্ধ হয়ে যায় ওই উড়ালপুলের কাজ। ফলে, এখন সেটি কী অবস্থায় রয়েছে, তা কেউই জানেন না। সেই কারণেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঝড়ের আগের দিন থেকে ওই অংশের রাস্তায় গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে পুলিশকে।
লালবাজার জানিয়েছে, কাল, বুধবার সকাল থেকে হাওয়ার গতি এবং ঝড়ের পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে শহরের সমস্ত উড়ালপুল দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। তেমনই নির্দেশ গিয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডগুলির কাছে। বিভিন্ন উড়ালপুলের মুখে গার্ডরেল বসিয়ে যাতে রাস্তা বন্ধ করা যায়, এ দিন থেকেই তার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকেরা। সেই সঙ্গেই ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে বলা হয়েছে, বড় বড় হোর্ডিং বা জীর্ণ কোনও বাড়ির নীচে যেন গাড়ির পার্কিং না থাকে। পুলিশকে বলা হয়েছে, কোনও উড়ালপুল কিংবা সেতুর উপরে যেন গার্ডরেল না থাকে। কারণ, উড়ালপুলের উপরে বসানো গার্ডরেল ঝড়ে নীচে পড়ে গেলে বড়সড় অঘটনের আশঙ্কা থেকে যায়। পুলিশকর্মীদেরও ঝড়ের সময়ে সেতু বা উড়ালপুলে উঠতে বারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের হিসেব অনুযায়ী, বুধবার সকালেই উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস। সে সময়ে কলকাতা শহরে হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের আশপাশে৷ তাই আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এমন নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
পুলিশের এক কর্তা জানান, ঝড় শুরু হলে বাহিনীর সবাইকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা
হয়েছে। ঝড়ের মধ্যে বাইরে যেতেও বারণ করা হয়েছে তাঁদের। পাশাপাশি, গাছ উপড়ে পড়লে সিইএসসি এবং পুরসভার সঙ্গে কথা বলে তবেই তা সরানোর কাজে হাত দিতে বলা হয়েছে বাহিনীর সদস্যদের।