সরব: অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। বৃহস্পতিবার, স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের সামনে। ছবি: সুমন বল্লভ
অনলাইনে নয়, অফলাইনেই তাঁদের ছেলেমেয়েরা প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পরীক্ষা দিতে চায়। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখালেন স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের সামনে। তাঁদের দাবি, প্রথমসামগ্রিক মূল্যায়নের যে ক’টি পরীক্ষা বাকি রয়েছে, সেগুলি অফলাইনেই নিতে হবে। গরমের ছুটির পরে স্কুল খোলার কথা আগামী ২৭ জুন। তার পরেই অফলাইনে নিতে হবে বাকি পরীক্ষা।
এ বার করোনার জন্য এমনিতেই শিক্ষাবর্ষ দু’মাস দেরিতে শুরু হয়েছে। তার পরে তিন মাস ক্লাস হতে না হতেই টানা ৪৫ দিনের জন্য গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছিল। সেই ছুটি আরও ১১ দিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে স্কুলে সারা বছরে তিনটি পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়। প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয় মার্চ মাস নাগাদ। এ বার শিক্ষাবর্ষ দেরিতে শুরু হওয়ায় সেই মূল্যায়নই হয়নি অনেক স্কুলে।স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যাল জানান, তাঁদের স্কুলে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি পরীক্ষানেওয়ার পরেই গরমের ছুটি এগিয়ে আসায় স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। এখনও সেই ছুটি চলছে। তাই তাঁরা ভেবেছিলেন, এই ছুটির মধ্যেই অনলাইনে বাকি পরীক্ষাগুলি নিয়ে নেবেন।তা হলে স্কুল খুললে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষার পড়া শুরু করা যাবে। স্কটিশ চার্চ বেসরকারি স্কুল হলেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম ও নিয়ম অনুযায়ী চলে।
যদিও অধিকাংশ অভিভাবকেরই দাবি, তাঁদের ছেলেমেয়েরা বাড়িতে বসে অনলাইনে পরীক্ষা আর দিতে চাইছে না। তাঁদের প্রশ্ন, বোর্ডের পরীক্ষা যখন অফলাইনেই হবে, তখন পড়ুয়ারাই বা কেন অনলাইনে পরীক্ষা দেবে? এক অভিভাবকের মতে, “করোনাকালে গত দু’বছর ধরে অনলাইনেই পড়াশোনা চলেছে এবং পরীক্ষাও নেওয়া হয়েছে। এখন তো স্কুল খুলে গিয়েছে। তা হলে ছেলেমেয়েরা অনলাইনে পরীক্ষা দেবে কেন? তা ছাড়া, সকলেরবাড়িতে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার মতো ব্যবস্থাও নেই।”
শিক্ষক মহলের একাংশ মনে করছেন, এই সমস্যা শুধু স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের নয়। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন কবে হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষই। উত্তর কলকাতার সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়তী মজুমদার মিত্র যেমন বললেন, “আমাদের প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের চারটি পরীক্ষা হওয়ার পরে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। ভেবেছিলাম, বাকি পরীক্ষাগুলি গরমের ছুটির পরে ১৬ তারিখ স্কুল খুললেই নেব। কিন্তু ছুটি আবার বেড়ে গেল। তাই ২৭ জুন স্কুলখুললে তার পরেই আমরা বাকি পরীক্ষা নেব। তবে পরীক্ষা হবে অফলাইনেই।” জয়তী জানান, তাঁদের স্কুলের অনেক পড়ুয়াই খুব সাধারণ পরিবারের। সকলের বাড়িতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্মার্টফোনও নেই।
এ দিন স্কুলের সামনে অভিভাবকদের একাংশের ]বিক্ষোভের পরে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাসবাবু বলেন, “আমরা ছাত্রদের স্বার্থেই সব পদক্ষেপ করি। অভিভাবকদের কথা শুনেছি। অনলাইনে ক্লাসহচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম, অনলাইনেই পরীক্ষা নিয়ে এগিয়ে রাখব পড়ুয়াদের। তবে অভিভাবকদের দাবিশুনে ঠিক করেছি, শুক্রবার আমাদের সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানিয়ে দেব।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।