প্রাণবায়ু: ভরা অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগানো হচ্ছে হাসপাতালের লাইনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ভবানীপুরের কলকাতা পুলিশ হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। এ বার ওই হাসপাতালের জন্য পৃথক অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। সূত্রের খবর, খুব দ্রুত ওই প্লান্ট-সহ করোনা চিকিৎসার সব রকম সুযোগ-সুবিধা বা পরিকাঠামো বানানোর কাজ শেষ হবে।
সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালে ৪০টি এইচডিইউ সুবিধা যুক্ত শয্যার ব্যবস্থা থাকছে। সেখানে প্লান্ট থেকে সরাসরি পাইপের মাধ্যমে রোগীদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হবে। বাকি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা করোনা রোগীদের জন্য বি টাইপ অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ, অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দেওয়া হবে রোগীদের। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেনের আকাল নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এই হাসপাতালেও যাতে একই অবস্থা না হয়, তার জন্য প্রশাসন আগে থেকেই সচেষ্ট হয়েছে। ওই হাসপাতালের একটি দিকে কলকাতা পুলিশ বাহিনীর করোনা আক্রান্ত সদস্যদের জন্য পৃথক ৫০টি শয্যার সেফ হোম থাকছে। যাঁদের উপসর্গ বিশেষ নেই, তাঁদেরকেই সেখানে রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন পড়লে তাঁদের ওই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, সাধারণ হাসপাতাল থেকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করার কাজের অগ্রগতি দেখতে বুধবার ওই হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ করে সেখানে করোনা রোগীদের রেখে চিকিৎসা শুরু হবে। ইতিমধ্যে ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্য রোগীদের অন্যত্র সরানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই হাসপাতালে ৩০০টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে ১৫০টি সাধারণের জন্য থাকবে। বাকি শয্যা থাকবে করোনা আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের জন্য। তবে এইচডিইউতে কোনও ভাগাভাগি থাকছে না। প্রয়োজন মতো সেখানে রোগীদের ভর্তি করা যাবে। তবে ওই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত পুলিশকর্মীরা সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন। বর্তমানে যে ভাবে লালবাজারের করোনা ওয়েলফেয়ার সেলের সহায়তায় করোনা আক্রান্ত বাহিনীর সদস্যেরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, ঠিক সেই ভাবেই ওই কাজ চলবে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে ওয়েলফেয়ার সেলের এসি পুরো বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করবেন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন পুলিশ কর্তারা। এ ছাড়া, হাসপাতালের বিভিন্ন কারিগরি বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য সেখানে যান প্রশাসনের একাধিক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে পুলিশ হাসপাতালটি এসএসকেএমের অধীনে রয়েছে। ফলে পরিকাঠামো তৈরি করতে বেশি সময় লাগবে না। এ ছাড়া, চিকিৎসক নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য কর্মী সব ওই হাসপাতালে রয়েছে। এ ছাড়া, লালবাজার জানিয়েছে, অন্য সরকারি হাসপাতালে যাতে পুলিশকর্মীরা পুলিশ হাসপাতালের মতোই সুবিধা পান, তার জন্যও প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারি করা হয়েছে।