মারে ফাটল শিশুর মাথা, আটক স্বামী-স্ত্রী

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শনিবার আচমকাই বেবির ছেলের একটানা কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। তা শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে দেখেন, শিশুটির কপাল থেকে রক্ত ঝরছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০১:৩১
Share:

আড়াই বছরের শিশুকে দুষ্টুমির শাস্তি দিতে দেওয়ালে মাথা ঠুকে ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক আয়া সেন্টারের মালিক-দম্পতির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যায় সোনারপুর থানা এলাকার বিদ্যাধরপুরের হাসনাপুর গ্রামে। রবিবার সন্ধ্যায় শিশুটির পরিবারের তরফে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে ওই দম্পতিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ের গৌড়দহের বাসিন্দা বেবি মণ্ডল এবং নিশিপদ মণ্ডল সম্প্রতি তাঁদের দুই সন্তানকে নিয়ে সোনারপুরের বিদ্যাধরপুরে বাড়ি ভাড়া করে আসেন। বিদ্যাধরপুর স্টেশনের পাশে একটি আয়া সেন্টারে কাজও শুরু করেন বেবি। সেই সেন্টারের মালিক মৌমিতা হালদার এবং তাঁর স্বামী রাজু হালদার। ওই সেন্টারের মাধ্যমে বালিগঞ্জের একটি বাড়িতে ২৪ ঘণ্টার জন্য আয়ার কাজের সুযোগ পান বেবি। প্রায় মাস দেড়েক টানা থাকতে হবে সেখানে। সে ক্ষেত্রে দুই সন্তানের দেখভালের সমস্যা হবে। কিন্তু সেন্টারের মালিকের কথা মতো বেবি তাঁর আড়াই বছরের ছেলে এবং বছর দেড়েকের মেয়েকে হালদার দম্পতির কাছে রেখে যান। মৌমিতা ও রাজুর তিন শিশুকন্যার সঙ্গেই থাকছিল বাচ্চা দু’টি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শনিবার আচমকাই বেবির ছেলের একটানা কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। তা শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে দেখেন, শিশুটির কপাল থেকে রক্ত ঝরছে। তাঁদের দাবি, বাচ্চাটি দুষ্টুমি করায় তাকে শাস্তি দিতে গালে থাপ্পড় মারেন মৌমিতা ও রাজু। শুধু তাই নয়, শিশুটির মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকাবাসী। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তের বাড়িতে চড়াও হয়ে স্থানীয়েরা তাঁদের মারধর করেন। পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে সুভাষগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্তদের উদ্ধার করে সোনারপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মৌমিতা ও রাজুকে আটক করা হয়।

Advertisement

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান শিশুর মা-বাবা। শিশুটির মা বেবির অভিযোগ, ‘‘ওঁদের কথা মেনে কাজে যাওয়ার আগে দুটো বাচ্চাকে রেখে গিয়েছিলাম। ভরসা করেছিলাম ওঁদের। এখন দেখছি, আমার বাচ্চা দুটোর উপরে ওঁরা অত্যাচর করে গিয়েছেন।’’ বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তা বলেন, ‘‘জখম শিশুর বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশু নির্যাতনের ধারায় মামলা শুরু হচ্ছে। আপাতত আয়া সেন্টারের মালিক-দম্পতিকে আটক করা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement