প্রতীকী ছবি
শহর লাগোয়া পুর এলাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজার ছুঁয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৩৫। মোট ৩৫টি ওয়ার্ডে সংক্রমণ রুখতে কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরি থেকে বাজার জীবাণুমুক্তকরণ, সচেতনতা প্রচার— হয়েছে সবই। তবু সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তবে করোনাকে রোখা না গেলেও রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় এ বছর ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব সে ভাবে হয়নি বলেই দাবি করছেন পুর আধিকারিকেরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, রাজপুর-সোনারপুরে এলাকাভিত্তিক করোনা পরীক্ষা চালু করা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কী ভাবে সংক্রমণ রোখা সম্ভব, তা নিয়ে রীতিমতো দিশেহারা অবস্থা পুরসভার। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবে রাশ টানা গিয়েছে বলেই মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর অগস্টে ওই পুর এলাকায় ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫০। এমনকি ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। পুরসভার প্রশাসক, পেশায় চিকিৎসক পল্লব দাস বলেন, ‘‘এক ভয়ঙ্কর সন্ধিক্ষণে আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি। করোনার সংক্রমণের পাশাপাশি যদি ডেঙ্গিও ছড়িয়ে পড়ে, তা হলে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।’’
এ বছরে পুর এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব কম হওয়ার কারণ কী? পুর কর্তাদের মতে, করোনার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে তার ফল যে কী মারাত্মক হতে পারে, এমনকি এ ক্ষেত্রে যে মৃত্যু প্রায় অনিবার্য— সচেতনতা প্রচারে সেই কথা এলাকাবাসীকে জানানো হয়েছে। তাই করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নানাবিধ বিধিনিষেধ মেনে চলার পাশাপাশি ডেঙ্গি রুখতেও ব্যবস্থা নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তা ছাড়া পুরসভার তরফে দল গঠন করে এলাকাভিত্তিক ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জল জমতে না দেওয়া, মশারি ব্যবহার করার মতো নানা বিষয়ে স্থানীয়দের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাতেই কাজ হয়েছে।
পুর আধিকারিকদের মতে, বিগত কয়েক বছরে ডেঙ্গি রুখতে প্রচার চালানো হলেও মানুষ সে ভাবে সচেতন হচ্ছিলেন না। কিন্তু এ বার করোনার কারণে আতঙ্কিত এলাকাবাসী ডেঙ্গি নিয়েও যথেষ্ট সচেতন হয়েছেন। ফলে রাজপুর-সোনারপুর এলাকায় করোনাকে এখনও পর্যন্ত রোখা না গেলেও এ বছরে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব প্রায় নেই বললেই চলে। পল্লববাবুর কথায়, ‘‘মানুষ সচেতন হলে যে কোনও সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মার্চ মাস থেকে সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু তখন বাসিন্দাদের একাংশ কানেই তোলেননি। এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে সকলেই বিধিনিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে মরসুমের শুরু থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের নিয়মকানুনও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার কারণে তা এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত।’’