ফাইল চিত্র।
দোতলা, তেতলা এবং চারতলার মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেন মেয়র-সহ কলকাতা পুরসভার মোট ১৩ জন মেয়র পারিষদ। এ বার তাঁদের সকলকে একটি তলেই বসানোর ব্যবস্থা হতে চলেছে।
পুরভবনে মেয়রের ঘরটি দোতলায়। লিফট থেকে বেরিয়েই অলিন্দ দিয়ে সোজা হেঁটে ঢুকতে হয় মেয়রের ঘরের পরিধিতে। সেই ঘরের কাছাকাছি অলিন্দের পাশে পর পর ঘর রয়েছে আরও তিন মেয়র পারিষদের। বাকি ন’জন মেয়র পারিষদের অফিসঘর এত দিন সদর দফতরের তেতলা এবং চারতলায় ছিল।
পুরসভা সূত্রের খবর, কাজের সুবিধার্থে এই পরিবর্তন। সেই কারণেই ন’জন মেয়র পারিষদের অফিসঘর পরিবর্তনের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করা হবে। এ নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, একেই পুরসভার ভাঁড়ারে টান। যে কারণ দেখিয়ে অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধানে পিছিয়ে যাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, এমন পরিস্থিতিতে অফিসঘর বদল করার কি খুব দরকার ছিল?
চলতি পুরবোর্ডে মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পরেই ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভার সদর দফতরের দোতলায় সমস্ত মেয়র পারিষদের অফিসঘর করা হবে। মেয়রের যুক্তি ছিল, তাঁর অফিসঘরের পাশাপাশি মেয়র পারিষদেরা থাকলে কাজের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে। বিশেষত রাস্তা, পরিবেশ, আইন বিভাগের মেয়র পারিষদদের তেতলা থেকে অনেকটা পথ ডিঙিয়ে মেয়রের অফিসে আসতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় সেই সমস্যা মিটবে।
ন’জন মেয়র পারিষদের নতুন অফিস তৈরির জন্য ছ’টি ঘরকে ফাঁকা করতে হচ্ছে। ওই ছ’টি ঘরে বসেন যে আধিকারিকেরা, তাঁদের রক্সি বিল্ডিং-সহ অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সূত্রের খবর, সদর দফতরের দোতলায় ন’জন মেয়র পারিষদের নতুন অফিস তৈরি করতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করা হবে।
বাম কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারপার্সন, মধুছন্দা দেবের অভিযোগ, ‘‘আয়ের তুলনায় খরচ বেশি হচ্ছে। একইসঙ্গে পুরসভার বিপুল ঋণের বোঝাও আছে। এই অবস্থায় মেয়র পারিষদের ঘর বদলের কোনও প্রয়োজনই ছিল না।’’ বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ঠিকাদার থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা বকেয়া টাকা থেকে বঞ্চিত। সেখানে মেয়র পারিষদদের অফিসঘর বদল করার মানেই হয় না।’’ তবে মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কাজের সুবিধার জন্যই মেয়র, পুর কমিশনার মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পরিবর্তনে খুব বেশি টাকাও খরচ হবে না। বিরোধীরা অযৌক্তিক কথা বলছেন।’’