প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে এ বছর কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তিতে উদ্যোগী হয়েও প্রস্তুতির অভাবে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। ফলে আগের মতোই স্নাতক স্তরে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজেরা অনলাইনে ভর্তি নেবে। কাল, সোমবার থেকে সেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। তবে ইতিমধ্যেই শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির নেতা-কর্মীদের আনাগোনা বেড়েছে কলেজ চত্বরে— উঠছে এমনই অভিযোগ ।
অনলাইনে ভর্তির জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা রয়েছে, ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে চলবে। গত কয়েক বছরের মতো পড়ুয়াকে কাউন্সেলিং, নথি যাচাইয়ের জন্য কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা যাবে না। মেধা তালিকায় নাম প্রকাশের পরে ভর্তির ফি অনলাইনেই জমা দিতে হবে। আগে এ-ও জানানো হয়েছিল, কলেজে ভর্তির হেল্প ডেস্ক করা চলবে না। কিন্তু কিছু কলেজ অধ্যক্ষের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই ছাত্রনেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।
গত ছ’বছর রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। তাই ছাত্র সংসদের অস্তিত্বই থাকার কথা নয়। কিন্তু অধিকাংশ কলেজে ছাত্র সংসদ যাদের দখলে ছিল, সেই টিএমসিপি-র দৌরাত্ম্য বহু জায়গাতেই রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বার বার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্য কলকাতার একটি কলেজের অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা, ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও অনেক সময়ে অনেক পড়ুয়া কলেজে এসে খোঁজখবর নেন। তাঁদেরই নিশানা করেন ওই সব ছাত্রনেতারা। কলেজে এখন পরীক্ষা চললেও এই সব ছাত্রনেতা এবং তাঁদের দলবল ক্যাম্পাসে ঘুরছেন। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় জানালেন, তাঁদের কলেজ চত্বরে ঘুরে বেড়ানো ছাত্রনেতা-কর্মীদের আচরণও ছাত্রসুলভ নয়। এ দিকে কলেজে সিমেস্টার পরীক্ষা চলছে।
আগেও কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করে রাজ্য সরকার পিছিয়ে গিয়েছিল। পরে ছাত্র-ভর্তিতে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাতে নাম জড়িয়েছে টিএমসিপির। শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি শুরু হলে এই দুর্নীতি বন্ধ হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বছরেও তা শুরু হল না। ফলে কলেজে কলেজে ছাত্রনেতাদের আনাগোনা নিয়ে চিন্তিত অধ্যক্ষেরা।
টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কর ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় ছাত্র সংসদ কোনও ভাবেই থাকবে না। স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়া চলুক, সেটাই চাই। ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা যেন প্রলোভনের ফাঁদে পা না দেন।’’