গত ২০ তারিখ হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গার্ডেনরিচের বিচালিঘাট রোডের একটি চারতলা বাড়ি। ফাইল ছবি।
অগ্নিকাণ্ডের জেরে সিলিন্ডার ফেটে জখম হওয়া ২২ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে রোগীদের দেখে বেরোনোর পরে তাঁর নাম করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানিয়েছিলেন, শরীরের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে ওই ব্যক্তির। গার্ডেনরিচে বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর জখম সেই মহম্মদ শেকুর মৃত্যু হল পাঁচ দিনের মাথায়, মঙ্গলবার। বছর আটত্রিশের ওই যুবকের পরিবারকে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। ভোরের দিকে মৃত্যু হয়।
গত ২০ তারিখ হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গার্ডেনরিচের বিচালিঘাট রোডের একটি চারতলা বাড়ি। জানা যায়, ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে তৈরি হওয়া ওই বাড়ির একটি ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা গিয়েছিল। আগুন লেগেছে ভেবে উদ্ধারের জন্য সেখানে ছুটে যান কয়েক জন। ঠিক তখনই আগুনের তাপে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যায়। রাস্তায় ছিটকে পড়েন উদ্ধারের জন্য যাওয়া লোকজন। তাঁদেরই এক জন শেকু। সব মিলিয়ে ২২ জনকে জখম অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কয়েক জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এখনও ১২ জন সেখানে চিকিৎসাধীন। এই মৃত্যুর খবরে স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ওই রোগীদের পরিজনদের মধ্যে।
আহতদের মধ্যে এক জন আজগর আলি। তাঁর ভাই আকবর আলি এ দিন বললেন, ‘‘সারাক্ষণই ভয় হচ্ছে, এর পরে কার খবর আসবে! আমাদের গোটা পাড়া যেন খারাপ খবরের জন্যই হাসপাতালে এসে রাত জাগছে।’’ আর এক গুরুতর জখম আব্দুল আজিমের পুত্র মহম্মদ সফিয়ান বললেন, ‘‘আমার বাবা ভাল রকম পুড়ে গিয়েছেন। তাই সব সময়ে ভয়ে ভয়ে আছি। হাসপাতাল থেকে ফোন এলেই ভয় লাগছে। কিন্তু যা খবর পেলাম, বাবার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’’
ভাল খবরের আশায় ছিল শেকুর পরিবার। কিন্তু হঠাৎ পাওয়া এমন খবরে কথা বলার মতো অবস্থা নেই শেকুর স্ত্রী শবনম জরিন এবং মা সায়েদা বানুর। বছর এগারোর ছেলে মহম্মদ আজমির বুঝেই উঠতেপারছে না, কী ঘটে গিয়েছে। তার মধ্যেই শেকুর দিদি আরতি বললেন, ‘‘দু’দিন আগেই ইদে ভাইয়ের জন্মদিন ছিল। দিনভর ওর দীর্ঘায়ু কামনা করলাম। কিন্তু ভাইটা ফিরল না।’’ কথা বলতে বলতেই গলা বুজে আসে তাঁর।