প্রতীকী ছবি।
মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে বাবা জানিয়েছিলেন, ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন। মেয়ের স্কুটারটি নিয়েই বেরিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টা দুয়েক পরে পুলিশের কাছ থেকে খবর এল, সেই স্কুটারটি উড়ালপুলের উপরে দাঁড় করিয়ে রেখে ঝাঁপ দিয়েছেন বাবা। ঘটনার আকস্মিকতায় মেয়ে-সহ গোটা পরিবার স্তম্ভিত।
বুধবার রাতে মা উড়ালপুলের উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে অশোক ঘোষ (৬৯) নামে এক বৃদ্ধের। কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, চেতলার প্যারীমোহন রায় রোডের বাসিন্দা অশোকবাবু এ দিন রাত আটটা নাগাদ স্কুটারটি দাঁড় করিয়ে রেখে উড়ালপুলের উপর থেকে পরমা আইল্যান্ডের দিকে ঝাঁপ দেন। তাঁকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে
সেখানেই অশোকবাবুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
বৃদ্ধের এমন পদক্ষেপে অবাক তাঁর পরিবার। তাঁরা জানান, আগামী বছর অশোকবাবুর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। দিনকয়েক আগেই পুরুলিয়ায় গিয়ে মেয়ের বিয়ে চূড়ান্ত করে আসেন তিনি। তাঁদের পরিবারেও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। খবর পেয়ে মেয়ে সুকন্যা রাতে হাসপাতালে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সুকন্যা জানান, তাঁর বাবার বালিগঞ্জে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর মা পরিবারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার মধ্যেই এমন খবর আসে।
সুকন্যা বলেন, ‘‘আমি অফিস থেকে ফিরে ঘুমোচ্ছিলাম। বাবাই আমাকে ডেকে বললেন, ডাক্তার দেখাতে যাবেন। আমি বলেছিলাম তাড়াতাড়ি ফিরতে। আমার স্কুটার বাবা হামেশাই চালাতেন। আজও আমার স্কুটার নিয়েই বাবা বেরিয়েছিলেন। কেন এই সব হল, আমি কিছু ভাবতে পারছি না।’’
হাসপাতালে ট্রলির উপরে পড়ে থাকা অশোকবাবুর দেহ দেখে আঁতকে ওঠেন পরিজনেরা। চেতলার প্যারীমোহন রোডে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান রয়েছে তাঁর। পরিবারের দাবি, ওই বৃদ্ধ কোনও মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলেও তাঁরা জানেন না। উল্লেখ্য, গত বছরেও মা উড়ালপুলে স্কুটার দাঁড় করিয়ে রেখে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন লেক টাউন এলাকার এক ব্যবসায়ী।