এই কুয়োয় পড়ে মৃত্যু হয় বরুণ চন্দ্রের। নিজস্ব চিত্র।
নিজের বাড়িতে পাতকুয়োর জলে ডুবে মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। সোমবার দুপুরে বেলেঘাটার রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র রোডের কানাইপাড়া এলাকায় ওই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বরুণ চন্দ্র (৫৭)। তাঁর মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছিল। তাই ওই প্রৌঢ় আত্মঘাতী হয়েছেন, না কি পা পিছলে কুয়োয় পড়ে গিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপ্রশস্ত কুয়োর মধ্যে দেহটি এমন ভাবে পড়েছিল যে, সেটি উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যায় দমকলও।
বরুণবাবুর পরিবারের সদস্যেরা জানান, এ দিন তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন। তাঁর স্ত্রী মমতা চন্দ্র স্থানীয় একটি স্কুলে মিড-ডে মিলের কাজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। বরুণবাবুর মেয়ে গিয়েছিল স্কুলে। বেলার দিকে বরুণবাবুর বৌদি কল্পনা চন্দ্র বাড়ি ফিরে কুয়োর পাড়ে জামাকাপড় কাচতে গিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম দেখতে পান, কুয়োর জলে মাথা নিচু অবস্থায় বরুণবাবুর দেহ ভাসছে। কল্পনার চেঁচামেচি আর কান্না শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
বরুণবাবুর স্ত্রী মমতা জানান, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁর স্বামী কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ইদানীং তিনি কিছু করতেন না। মানসিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় নিয়মিত ওষুধ খেতে হত তাঁকে। বৌদি কল্পনা জানান, ইদানীং বরুণবাবু কুয়োর পাড়ে মাঝেমধ্যেই ঘোরাফেরা করতেন। তাই তিনি কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছেন কি না, তা নিয়েও পরিবারের লোকজন ধন্দে আছেন।
কলকাতা পুরসভার নিয়মে শহরের বুকে কুয়োর ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন বাড়িতে কুয়ো রয়েছে, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে মৃতের পরিবারের দাবি, তাঁদের বাড়ির গলিতে জলের চাপ কম। তাই তাঁরা কুয়োর জল ব্যবহার করেন।
বরুণবাবুর স্ত্রী জানান, তাঁরা রাস্তায় কলকাতা পুরসভার কল থেকে পানীয় জল পান। কিন্তু অন্য কাজের জন্য বাড়িতে যে কল রয়েছে, তাতে জলের চাপ কম। তাই বাধ্য হন কুয়োর জল ব্যবহার করতে।
যদিও স্থানীয় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অলকানন্দা দাসের দাবি, ওই এলাকায় জলের চাপ ঠিকই আছে। তিনি বলেন, ‘‘জলের চাপ কোথাও কম নেই। এলাকার ওই একটি বাড়িতেই কুয়ো রয়েছে। বাড়িটির একাধিক শরিক। তাঁদের নিজস্ব গোলমালের কারণেই কুয়োটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।’’