—ফাইল চিত্র।
বৃষ্টি থামার পরে কেটে গিয়েছে এক দিনেরও বেশি সময়। কিন্তু উত্তর এবং মধ্য হাওড়ার অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা থেকে শনিবারেও জমা জল নামেনি।
হাওড়া পুরসভার ৪৯, ১৯, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকাংশ এখনও জলমগ্ন। পঞ্চাননতলা রোড ও সংলগ্ন অলিগলি, টিকিয়াপাড়া, বেলিলিয়াস লেন, বেলিলিয়াস রোডে জল জমে আছে। জল পুরো নামেনি উত্তর হাওড়ার ঘোষপাড়া, মহীনাথ পোড়েল লেন, নস্করপাড়া রোড, ছোটেলাল মিশ্র রোড, হনুমান কুলিলাইন, মাধববাবু লেন, দয়ারাম নস্কর লেন, বেলগাছিয়া ভাগাড়, বেনারস রোড, লিলুয়ার কুমিল্লা পাড়া, ভট্টনগর, ঝাউতলা থেকে। এ দিকে সঙ্কট শুরু হওয়ায় পুরসভাকে আরও পানীয় জল পাঠাতে বলা হয়েছে।
এত জল জমার কারণ কী, তা দেখতে এ দিন হাওড়ার পুর কমিশনার ধবল জৈনের নেতৃত্বে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল শহরে ঘোরে। গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত লকগেটগুলিও পরিদর্শন করা হয়। পরে জেলা সেচ দফতরের সঙ্গে খালগুলির সংস্কার নিয়েও বৈঠক হয়েছে। পুরসভা জানায়, গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় জমা জল দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে। সেচখালগুলি থেকে পলি তোলার কাজও শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, আর এক দিনের মধ্যে বেশির ভাগ জায়গা থেকে জল নেমে যাবে।
টানা বৃষ্টিতে মধ্য হাওড়ার ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের পাশে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবাসন দফতরের তৈরি হাউজ়িং চত্বর এখনও এক ফুট জলের নীচে। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০০৫-’০৬ সালে নির্মিত ওই আবাসনে আজ পর্যন্ত এত জল ঢোকেনি। আবাসনের জল ড্রেনেজ ক্যানালের ডবল ব্যারেল দিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু নিয়মিত পলি না তোলায় সেটির নাব্যতা কমে জল বেরোতে পারছে না। তবে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ডুমুরজলা ঝিলের অনেকাংশ বুজিয়ে পুরসভা ইকো পার্ক তৈরি করেছে। অভিযোগ, সেই কারণে ঝিলের গভীরতা ও জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বৃষ্টির জল বেরোতে পারছে না। এ দিন আবাসনগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। জল বার করতে আটটি পাম্প বসানো হয়।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, হাওড়া শহর জুড়ে গত ২০ বছরে যে ভাবে অপরিকল্পিত উপায়ে ঘরবাড়ি, ফ্ল্যাট, আবাসন তৈরি হয়ে শহর বেড়েছে এবং প্লাস্টিক ফেলে নিকাশি নালা বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে, তাতেই নিকাশি অবরুদ্ধ হয়ে এমন পরিস্থিতি হয়েছে।