প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে বিধাননগর এবং দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। দিন কয়েক আগেই দক্ষিণ দমদমের বাঙুরে ডেঙ্গিতে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ওই পুরসভারই লেক টাউন থানার আইসি-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
শীতের মুখে ফের ডেঙ্গির দাপট শুরু হওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়। তবে দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ বলছেন, লেক টাউন থানা বা বাঙুরের ঘটনা বিচ্ছিন্ন। ওই দু’টি বাদ দিলে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও খবর নেই।
বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের ‘এ’ ব্লকের বাসিন্দা শাশ্বতী দত্ত (২৪) গত সপ্তাহে জ্বরে আক্রান্ত হন। তাঁর স্বামী সৌরভ দত্ত জানান, ২২ অক্টোবর রক্ত পরীক্ষা করা হয় তাঁর স্ত্রীর। তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। যদিও সেই মুহূর্তে রক্তে প্লেটলেট ছিল প্রায় দু’লক্ষ। তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি হননি। কিন্তু পরের দিন থেকেই তাঁর অসুস্থতা বাড়তে থাকে। তার পরের দিন প্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। রাজারহাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় মহিলার। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম’ লেখা হয়েছে ডেথ সার্টিফিকেটে। সৌরভবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাঁদের এক বছরের একটি সন্তান রয়েছে।
গত সপ্তাহেই লেক টাউন থানায় এক এক করে চার জন পুলিশকর্মী জ্বরে আক্রান্ত হন। সকলের রক্তেই ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জন আপাতত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত শনিবার জ্বরে আক্রান্ত লেক টাউন থানার আইসি নন্দদুলাল ঘোষেরও ডেঙ্গি ধরা পড়ে। তিনি অবশ্য হাসপাতালে ভর্তি হননি। আপাতত বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে আক্রান্ত মহিলার মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক। কিন্তু পুরকর্মীরা একাধিক বার ওই বাড়িতে গিয়ে জল জমানোর প্রমাণ পেয়েছেন। তাঁদের বারবার সাবধানও করা হয়েছিল। পুলিশকর্মীরা কী ভাবে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন, তা আমাদের খুঁজে দেখতে হবে।’’
বিধাননগর পুর এলাকার বাগুইআটি, জগৎপুর, দশদ্রোণ, কেষ্টপুর থেকে শুরু করে মহিষবাথান, তারুলিয়া-সহ একাধিক এলাকা থেকে জ্বরের প্রকোপের খবর পৌঁছেছে বিধাননগর পুরসভায়। তবে নতুন করে কোনও মৃত্যুর খবর আসেনি বলেই পুরসভার দাবি। পুরসভা সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে অক্টোবর মাসে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তা চিন্তায় রেখেছে বিধাননগর পুর প্রশাসনকে। তবে পুরসভার দাবি, দ্রুত এলাকা চিহ্নিত করে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।