—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
একে বাহিনীতে কর্মী-সঙ্কট। সেই সঙ্গে পুজোয় লাগামছাড়া ভিড়ের আশঙ্কা। এই দুই সমস্যার জেরে এ বছর এক ধাক্কায় পুজোয় স্বেচ্ছাসেবকের
সংখ্যা পাঁচ হাজার বাড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ। পুজোর দিনগুলিতে রাস্তায় দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অন্যতম ভরসা হতে যাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের এই স্বেচ্ছাসেবকেরা। কিন্তু সংখ্যা বাড়লেও প্রশিক্ষণহীন স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে আদৌ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি— সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে লালবাজারের পুলিশকর্তাদের।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রতি বছর পুজোকে কেন্দ্র করে দৈনিক নির্দিষ্ট মজুরির ভিত্তিতে রাস্তায় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে কলকাতা পুলিশ। এ বছর পুজোয় মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে মোট ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রাখার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে। গত বছর এই সংখ্যাটা ছিল ১০ হাজার। তবে এ বছর সেই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য ১৮ হাজার গেঞ্জি এবং টুপি
বানানোর বরাত দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, মহালয়ার পর থেকেই পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি এই স্বেচ্ছাসেবকদের রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মূলত, রাতের শহরে পুজো মণ্ডপগুলিতে জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ করতেই তাঁদের কাজে লাগানো হবে।
এমনিতেই গত কয়েক বছরে নতুন করে বাহিনীতে নিয়োগ না হওয়ায় কলকাতা পুলিশে নিচুতলার কর্মীর সংখ্যা হু হু করে কমেছে প্রায় আট হাজার। লালবাজার সূত্রের খবর, আপাতত বাহিনীতে মোট কর্মী আছেন প্রায় ১৪ হাজার। বিপুল
পরিমাণে কর্মী-সঙ্কট থাকার কারণেই পুজোর ভিড় সামলাতে আরও বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবককে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন লালবাজারের পুলিশকর্তাদের একাংশ। পাশাপাশি,
এ বছর গত বারের তুলনায় পুজোর ভিড় আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। পুজোর ক’দিন কয়েক লক্ষ মানুষ পথে নামবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
তাই বাহিনীতে কর্মী সঙ্কট থাকায় কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে পুজোয় আরও বেশি সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবককে কাজে লাগানো হবে বলে সূত্রের খবর। তবে দীর্ঘ দিন ধরে বাহিনীতে কাজ করে আসা কর্মীরা ভিড় সামলাতে যতটা পারদর্শী, স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে সেই কাজ আদৌ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন থাকছেই। আমজনতার একাংশের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের কথা না-শোনার প্রবণতাও থাকে। সে ক্ষেত্রে কী হবে, তা-ও ভাবাচ্ছে পুলিশকর্তাদের।
যদিও লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, ‘‘পুজোর ক’দিন রাস্তায় ভিড় সামলাতে শুধু স্বেচ্ছাসেবকেরাই থাকবেন, এমন নয়। রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ ও উইনার্স বাহিনীর সদস্যেরা মোতায়েন থাকবেন।
পুলিশের অন্য বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ দেখাশোনার জন্য তাঁদের সঙ্গেও পুলিশের আধিকারিকেরা থাকবেন।
পুজোর ভিড় দক্ষ হাতে সামলে নির্বিঘ্নে উৎসব সামলাতে প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ।’’