বক্তা: ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার, হরিশ মুখার্জি রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ
গত দু’বছরে কলকাতায় দুর্ঘটনার হার কমেছে ৩৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমেছে ২৭ শতাংশ। আহতের হার কমেছে ৩২ শতাংশ। সোমবার সকালে হরিশ মুখার্জি রোডে কলকাতা পুলিশের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘শুধু কলকাতায় নয়, কলকাতা পুলিশের এই ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ কর্মসূচিতে উপকৃত হয়েছে সারা রাজ্য। গত দু’বছরে রাজ্য জুড়ে দুর্ঘটনার হার কমেছে ২৭ শতাংশ ও মৃত্যুর হার কমেছে ১৭.১ শতাংশ।’’
দু’বছর আগে ২০১৬ সালে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অন্য রাজ্য যেখানে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ বছরে সাত দিন পালন করে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ৩৬৫ দিনই পালন করে। গত দু’বছর ধরে টানা এই কর্মসূচি পালন করে দুর্ঘটনার হার অনেকটাই কমানো গিয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তাঁদের এই কর্মসূচি দেখে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশাও এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী বেপরোয়া গাড়ি চালানো নিয়ে সাধারণ মানুষকে বারবার সচেতন করে দেন। তাঁর মতে, এক মিনিট দু’মিনিট আগে পৌঁছনোর জন্য জীবন বিপন্ন করা উচিত নয়। মোটরবাইক চালানোর জন্য অবশ্যই হেলমেট পরা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যখন ট্রেডমিলে হাঁটি তখন শেষ দিকে হাঁটার স্পিড বাড়িয়ে দিয়ে দেখেছি হয়তো মিনিট দু’য়েক আগে লক্ষ্যে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু তাতে সমস্যাও হয়।’’
মমতা বলেন, ‘‘ট্র্যাফিক পুলিশকে রোদে, বৃষ্টিতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। ভুল হলে পুলিশের সমালোচনা করুন। কিন্তু ওঁদের কাজটাও এক বার ভেবে দেখুন। ওঁদের এই কাজ করতে গিয়ে বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।’’ তবে সেই সঙ্গে তিনি পুলিশকেও সচেতন করে জানান, শুধু শুধু মানুষকে হেনস্থা করবেন না। মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করুন।
গত এক মাস ধরে যে ভাবে কলকাতা পুলিশ নাকা তল্লাশি করছে তার প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সপ্তাহখানেক আগে নাকা তল্লাশির সময়ে এক বাইক আরোহী যুবক এক বৃদ্ধকে ধাক্কা মারেন। কর্তব্যরত তপন ওরাওঁ নামে এক কনস্টেবল ওই বাইক আরোহীকে ধরতে যান। মোটরবাইকটি তিনি ধরে ফেলেন কিন্তু মোটরবাইক চালক না থেমে হিঁচড়ে তপনবাবুকে প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান। তার পরে কোনও ভাবে পালিয়ে যান ওই মোটরবাইকের চালক।
এ দিন মমতা কলকাতা পুলিশের কর্মসূচিতে আসার আগে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি তপনবাবুকে দেখতে যান। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তপনবাবুকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
এ দিন শহর জুড়েই দেখা যায় সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ পালন হচ্ছে। ধর্মতলায় দেখা যায় একটি স্কুলের কয়েক জন ছাত্রছাত্রী ট্র্যাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ লেখা স্টিকার আটকে দিচ্ছে।