গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তর তর করে বাড়ছে। কলকাতা, দমদম, বিধাননগর, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। বৃহস্পতিবার ডেঙ্গি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা পুরসভায় বৈঠক করেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। কী ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত এক মাসেই বিপজ্জনক হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার এই বৃদ্ধি হয়েছে। যা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণেই ছিল বলে দাবি স্বাস্থ্য কর্তাদের।
শুক্রবার সকালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কলকাতা পুরসভারই এক আধিকারিকের। মৃতের নাম শান্তনু মজুমদার। খড়দহের বাসিন্দা শান্তনুবাবু পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। শান্তনুবাবুর বাবাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলে ওই পরিবার সূত্রে খবর।
বর্ষা বিদায় নিতেই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। চিকিৎসকদের চেম্বারে রোগীদের ভিড় লেগে রয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারের আশেপাশে রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। যদিও বেসরকারি মতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ।
শান্তনু মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেও (১৩১ নম্বর) ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে উদ্বিগ্ন পর্ণশ্রীর বাসিন্দারা। ১৪ নম্বর বরোর ১২৯ এবং ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডেরও একই হাল। এ ছাড়া ৫৭, ৬৩, ৮১, ৯৩, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৯, ১০০ ওয়ার্ডেও বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতার ১২টি বরোতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভাও।
আরও পড়ুন: দেশে গত ৬ বছরে চাকরি কমেছে ৯০ লক্ষ! দাবি গবেষণার
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে ছাড়াই সরকার গড়তে পারে শিবসেনা, হুঁশিয়ারি সঞ্জয় রাউতের
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ওই সব ওয়ার্ডে ডেঙ্গির আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রীতি মতো ক্ষুব্ধ ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনতে পুর আধিকারিকদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুরসভা সূত্রে খবর, স্বাস্থ্য কর্মীদের উদাসীনতায় ডেঙ্গির প্রকোপ ফের বাড়ছে বলে মনে করছেন অতীন ঘোষ। বেশ কয়েক জন এগজিকিউটিভ হেলথ অফিসারের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাশয়, ফাঁকা জমি, নির্মীয়মান বাড়ি এবং বহুতলে আবর্জনার মধ্যে জল জমছে। তা থেকেই ডেঙ্গি মশার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। ওই সব ওয়ার্ডে কেন আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে না, জমির মালিক আবর্জনা পরিষ্কার না করলে, কেন বরোর স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসারেরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছেন না, তা দেখা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।