প্রতীকী ছবি।
মত্ত অবস্থায় গাড়ি বা মোটরবাইক চালানো রুখতে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারের ব্যবহার অনেক দিনই শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। গত বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ার পরে সেই পরীক্ষা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলেও চলতি মাস থেকে তা আবার শুরু হয়েছে। এ বার গাড়ি ও বাইকের পাশাপাশি সেই তালিকায় যোগ হল সাইকেলও! কোনও সাইকেল আরোহী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন কি না, তা পরীক্ষা করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার নিয়ে থাকছেন পুলিশকর্মীরা।
কেন যুক্ত হল সাইকেল? পুলিশের দাবি, গত কয়েক দিনে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় একাধিক সাইকেল আরোহী দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। পর পর দু’দিন চিৎপুর এবং ঠাকুরপুকুরে দু’টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই সাইকেল আরোহীর। গত ১৫ দিনে গুরুতর জখম হয়েছেন অন্তত সাত সাইকেল আরোহী। এর পরেই রাতের শহরে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে সাইকেল আরোহীদের শ্বাস পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় লালবাজার। বৃহস্পতিবার থেকেই এই অভিযান শুরু করেছে কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ড। কোনও সাইকেল আরোহী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ধরা পড়লে তাঁকে থানার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, দু’দফায় লকডাউনের পর থেকেই শহরের রাস্তায় সাইকেলের সংখ্যা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, মূলত মানবিক কারণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি বাদ দিয়ে বাকি রাস্তাগুলিতে সাইকেল চালানোয় বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তাতে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১৩ জন সাইকেল আরোহী দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। যা অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। এক পুলিশকর্তা জানান, এই দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাইকেল চালক যে মত্ত অবস্থায় ছিলেনই, তা নিশ্চিত ভাবে বলা না গেলেও কিছু ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ার পরে পুলিশ ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারের ব্যবহার সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় শহরে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে অভিযোগ। গত ৮ নভেম্বর থেকে ফের ওই অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন পুলিশকর্তারা। লালবাজার জানিয়েছে, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ৩০১ জন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার যন্ত্রটি প্রতি বার ব্যবহারের পরে পাইপটি পাল্টানোর পাশাপাশি যন্ত্রটিও জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।