ফাইল চিত্র।
প্রকৃতি ডাকলেও যত্রতত্র সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বার থেকে সাবধান!
কারণ, শহরের রাস্তাঘাটে বা উন্মুক্ত কোনও জায়গায় শৌচকর্ম করতে গিয়ে ধরা পড়লেই জরিমানা গুনতে হবে ৫০০ টাকা। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে মাইকে প্রচার শুরু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার বস্তি উন্নয়ন দফতরের কর্মী ও আধিকারিকেরা একাধিক দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে নামবেন। ওই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘খোলা জায়গায় প্রস্রাব করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা শহর জুড়ে এর বিরুদ্ধে অভিযানে নামব।’’
একই সঙ্গে পুরসভা জানিয়েছে, শহরের সমস্ত উন্মুক্ত শৌচালয় ভেঙে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, ১০১ থেকে ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সংযুক্ত এলাকায় বহু উন্মুক্ত শৌচালয় রয়েছে। সেগুলি থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। স্বপনবাবুর কথায়, ‘‘উন্মুক্ত শৌচালয় ভেঙে দিয়ে নতুন স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরি করব। এর ফলে পরিবেশও বাঁচবে।’’
পুরসভার তরফে করানো একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, এ শহরে প্রায় চার লক্ষ মানুষ ফুটপাতে থাকেন। বস্তি উন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট পরিচ্ছন্ন রাখতে ফুটপাতবাসীদের সতর্ক করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।’’ ওই দফতর সূত্রের খবর, বস্তি ও ফুটপাতের বাসিন্দাদের জন্য বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু শৌচালয় তৈরি করা হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের কোনও বস্তি এলাকাতেও উন্মুক্ত শৌচালয় রাখা হবে না। সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত নতুন শৌচালয় গড়া হবে। বস্তি উন্নয়ন দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘মধ্য কলকাতার অনেক এলাকাতেও রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় মানুষ অবাধে প্রস্রাব করেন। যেমন, ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ থেকে ম্যাডান স্ট্রিট পর্যন্ত রাস্তায় পথচারীরা দুর্গন্ধে হাঁটতে পারেন না।’’
পুরসভার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও ৫০০ টাকা জরিমানার ভয়ে খোলা জায়গায় প্রস্রাব করা বন্ধ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। পাশাপাশি, গঙ্গার দূষণ নিয়েও চিন্তিত তিনি। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘মেটিয়াবুরুজ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত গঙ্গাপাড়ের মধ্যে কেবল বাজেকদমতলা ঘাট থেকে মিলেনিয়াম ঘাট পর্যন্ত অংশের সংস্কার হয়েছে। বাকি অংশে মানুষ যত্রতত্র মল-মূত্র ত্যাগ করায় গঙ্গা দূষিত হচ্ছে। গঙ্গার ধারে বেশি করে শৌচালয় তৈরি করলে গঙ্গাও বাঁচবে।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘ফুটপাতবাসীদের ৫০০ টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাঁদের জন্য আরও বেশি করে শৌচাগার তৈরি করা হোক।’’