সুরক্ষা: ফের পরিষেবা শুরু করার আগে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে মেট্রোর কামরা। নিজস্ব চিত্র
মেট্রো স্টেশনে থুতু ফেলতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে এত দিন শুধুই জরিমানা হত। স্টেশন নোংরা করার অপরাধে কত জনকে জরিমানা করে কত টাকা আয় হল, প্রাক্ করোনা পর্বে নিয়মিত সেই তথ্য প্রকাশ করতেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনা আবহে থুতু নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে বহুগুণ। তাই, পরিষেবা শুরু হলে সংক্রমণ ঠেকানোর প্রশ্নে যাত্রীদের থুতু ফেলার অভ্যাস চিন্তায় ফেলেছে কর্তৃপক্ষকে। যাত্রীদের একটি অংশের এই প্রবণতা আটকাতে মেট্রো স্টেশনে আলাদা ডাস্টবিন রাখা উচিত কি না সেই প্রশ্নও উঠেছে।
জৈব এবং অজৈব বর্জ্য আলাদা করার জন্য বছর দেড়েক আগে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর প্রত্যেকটি স্টেশনে দু’ধরনের ডাস্টবিন বসানো হয়। এর ফলে কাগজের টুকরো, প্লাস্টিকের প্যাকেট বা খাবার স্টেশনে ফেলার প্রবণতা যাত্রীদের কমেছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তবে ডাস্টবিন থাকায় কিছু যাত্রীর সেখানেই পানের পিক বা থুতু ফেলার প্রবণতাও বেড়েছে। ধরা পড়ার পরে ডাস্টবিনে থুতু ফেলাকে যুক্তিযুক্ত বলেও ব্যাখ্যা করেছেন তাঁদের কেউ কেউ।
করোনা পরবর্তী সময়ে যাত্রীদের থুতু ফেলার প্রবণতা ১০০ শতাংশ বন্ধ করাই লক্ষ্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের। তাই পরিষেবা শুরুর আগে আদর্শ আচরণবিধি তৈরির ক্ষেত্রেও ওই ভাবনা গুরুত্ব পাচ্ছে। সেই জন্য নিছক ৫০০ টাকা জরিমানা ধার্য করা পুরনো অভ্যাস বন্ধে যথেষ্ট কি না সেই প্রশ্নও উঠেছে। তবে এখনই জরিমানার অঙ্ক বাড়ানোর পথে না হাঁটলেও থুতু ফেলার অভ্যাস আটকাতে কতটা কঠোর হওয়া যায় সেই চিন্তাভাবনা চলছে।
মেট্রোর দু’টি কামরার ভেস্টিবিউলের গায়ে এবং লাইনে যাত্রীদের একাংশের থুতু ফেলার প্রবণতা যথেষ্ট। ড্রপলেট থেকে যে হেতু করোনা সংক্রমণ ছড়ায় ফলে এই অভ্যাস সেই আশঙ্কা বাড়িয়ে দেবে বলেও মনে করছেন চিকিৎসকেরা। মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, “এ ধরনের অভ্যাস খুব খারাপ। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। প্রবণতা আটকাতে কঠোর হতেই হবে।”
নোংরা ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে গিয়ে সাফাইকর্মীরাও সংক্রমিত হতে পারেন। স্টেশন মাস্টার বা বুকিং কাউন্টারের কর্মীরা অনেকের সংস্পর্শে আসেন। কোনও ভাবে তাঁরা যদি সংক্রমিত হন, স্টেশন চালানোর মতো কর্মী পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ফলে মেট্রোর পরিষেবায় বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে তাই যাত্রীদের থুতু ফেলার প্রবণতা বন্ধে কড়া নজরদারি শুরু করতে চান কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে কাউকে এমন কাজ করতে দেখলেই শুধু জরিমানা নয়, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষপাতী আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন: আজ খুলে যাচ্ছে কফিহাউস
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিষেবা শুরুর আগে এখন নানা বিধিনিষেধ চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। জরিমানাও থাকবে। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষ এই অভ্যাস বন্ধ করতে কঠোর অবস্থান নিতে চাইছেন।”