বুজ বাঁচাতে বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা করছে উত্তর দমদম পুরসভা। প্রতীকী ছবি।
বহু বছর পরে নিজের ছোটবেলার জায়গা, বিরাটিতে ফিরেছিলেন এক ভদ্রলোক। সেখানে রাস্তা ধরে হাঁটতে গিয়ে তিনি কার্যত হতবাক! রাস্তার দু’ধারে পুরনো গাছগাছালি সবই উধাও। বদলে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে পর পর বহুতল।
বিরাটির মধুসূদন ব্যানার্জি রোড বা এম বি রোড ধরে গেলে অধিকাংশ জায়গায় রাস্তার ধারে এ ভাবেই আজকাল আর গাছের দেখা মেলে না। কম-বেশি একই ছবি কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারেও। নগরোন্নয়নের জেরে সবুজের পরিমাণ কমছে বলেই অভিযোগ। তাই এ বার সবুজ বাঁচাতে বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা করছে উত্তর দমদম পুরসভা। এই দু’টি রাস্তা বরাবর পরিকল্পনামাফিক গাছ লাগানোর কথা ভাবছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
যদিও সেই প্রকল্প আখেরে কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে সংশয়ে বাসিন্দারা। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, এখনও যেটুকু গাছপালা রয়েছে, তা বাঁচাতে রক্ষণাবেক্ষণের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাঁদের দাবি, পুরনো বড় বড় গাছকে চিহ্নিত করে তার রক্ষণাবেক্ষণে শিথিলতা রয়েছে পুর প্রশাসনের তরফে। ফলে কেব্ল, হোর্ডিং, ফ্লেক্স, ব্যানারের জেরেও ক্ষতি হচ্ছে গাছের। তাই গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হলেও তার রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর দেওয়ার তেমন সদিচ্ছা নেই বলেই উঠছে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম সেনের কথায়, ‘‘উত্তর দমদমের প্রাণকেন্দ্র এম বি রোডে বিপুল পরিমাণ গাড়ির চাপ থাকে। কিন্তু তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছ নেই। দূষণ বাড়ছে।’’
প্রায় একই ছবি কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতেও। স্থানীয় বাসিন্দা মৌমিতা আদক বলছেন, ‘‘নগরোন্নয়ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাতে সবুজ ধ্বংস হলে তা রক্ষা করার মতো তৎপরতা দেখা যায় না।’’ এই অভিযোগ পুরোপুরি স্বীকার না করলেও পুর কর্তাদের একাংশ জানান, বসতি বৃদ্ধির ফলে পুর এলাকা ক্রমশ শহরের রূপ নিচ্ছে। একেবারে সবুজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এ কথা মানতে নারাজ তাঁরা। তবে নিশ্চিত ভাবে সবুজ রক্ষা এবং বৃক্ষরোপণের প্রয়োজন রয়েছে। তাই এই পরিকল্পনা। পুরসভা সূত্রের খবর, দু’টি রাস্তার ধারেই গাছ লাগানো হবে। রক্ষণাবেক্ষণেও বিশেষ জোর দেওয়া হবে। তবে দূষণ রোধে কী ধরনের গাছ লাগানো হবে, তা নিয়ে সুচিন্তিত পরামর্শ নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হবে।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাচীন এই পুর এলাকায় সবুজের পরিমাণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমেছে। তাই সবুজকে রক্ষা করা এবং সবুজের পরিমাণ বৃদ্ধি করা নিয়ে নির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা চলছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে এবং এম বি রোডে সেই কাজ করার পরিকল্পনা হয়েছে।’’