অযত্নে: লেক টাউনের কাছে রাস্তার ধারে মরা গাছ। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
এ রাজ্যের বহু সরকারি অনুষ্ঠানে এখন গাছের চারা দেওয়ার রীতি তৈরি হয়েছে।
পরিবেশের পক্ষে ইতিবাচক এই চিত্র। সবুজ বাঁচানো বিভিন্ন প্রকল্পও হাতে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। আবার উল্টো পিঠও রয়েছে। একের পর এক পূর্ণবয়স্ক গাছ কাটা পড়ছে রাতের অন্ধকারে। কিন্তু কারা সেই কাজের সঙ্গে জড়িত তা শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। ভিআইপি রোড ওই ঘটনার জ্বলন্ত উদাহরণ। একই সঙ্গে ওই রাস্তায় গাছের প্রতি অযত্নের ছাপও প্রকট ভাবে ধরা পড়ছে। ছাল-বাকল উঠে ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেক গাছই। মরেও গিয়েছে বহু গাছ।
কয়েক বছর আগে ভিআইপি রোডের কৈখালি থেকে হলদিরাম পর্যন্ত অংশে শতাধিক পাম গাছ কাটা পড়ে। ভিআইপি রোডের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুলিশের কাছে তাঁরা এফআইআরও করেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। আধিকারিকেরা জানান, সাধারণ মানুষের কাছেও আবেদন করা হয়েছে গাছ কাটা হলে কিংবা অভিযুক্তদের সম্পর্কে জানতে পারলে পূর্ত দফতরকে খবর দিতে।
সম্প্রতি জোড়ামন্দিরের কাছেও গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। পূর্ত দফতর বাগুইআটি থানায় গাছ কাটার অভিযোগও জমা করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভিআইপি রোডের দু’ধারে হোর্ডিং রয়েছে। সেই হোর্ডিংয়ে দেওয়া বিজ্ঞাপন যাতে ঢেকে না যায়, তার জন্যও গাছ কাটার অভিযোগ করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। অতীতে ভিআইপি রোড চওড়া করার সময়ে কৈখালি থেকে বিমানবন্দরের দিকের অংশে বহু গাছ কাটা পড়ে। বছর দশেক আগেও ভিআইপি রোড গাছে ভরা ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখন গাছ কমে গিয়েছে। ফলে ওই রাস্তায় দূষণও এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বলেই দাবি বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, গাছ কাটা ঠেকাতে প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাব রয়েছে।
রাজ্যের বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর দাবি, ইতিমধ্যেই ভিআইপি রোডের ধারে অনেক গাছ লাগানো হচ্ছে। তিনি জানান, ভিআইপি রোডের প্রথম দুই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে খালপাড়ে ২০০ নারকেল গাছ, প্রচুর পরিমাণে পাম গাছ লাগানো হয়েছে। অনেক পুরনো গাছ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সে ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে সেই পুরনো গাছ রেখেই সৌন্দর্যায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সুজিতবাবু জানান।