Crime

আনন্দপুর-কাণ্ডে মিলল গাড়ির খোঁজ, আরও ঘনীভূত রহস্য

গত শনিবার রাত ১২টা নাগাদ আনন্দপুরের একটি আবাসনের কাছে ওই দম্পতির সাহসিকতার জেরে রক্ষা পান এক তরুণী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৩৮
Share:

অস্ত্রোপচারের আগে নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আনন্দপুরে যৌন হেনস্থা ও খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। তবে অভিযুক্তের গাড়িটিকে সোমবার বিকেলে আনন্দপুর থানার পুলিশ পূর্ব যাদবপুরের পূর্বালোক থেকে আটক করেছে। আর তার পরেই এই ঘটনায় আরও ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। যার জট খুলতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযোগকারিণীকেও।

Advertisement

সেই রাতে বিপদগ্রস্ত তরুণীকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন দীপ শতপথী ও তাঁর স্ত্রী নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। এ দিন দীপ জানান, ওই তরুণীকে বাঁচাতে যাওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে গেলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। উল্টে এ দিন স্ত্রীর পায়ের অস্ত্রোপচার শেষ হলে দীপ নিজেই আনন্দপুর থানায় গিয়ে নতুন একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

গত শনিবার রাত ১২টা নাগাদ আনন্দপুরের একটি আবাসনের কাছে ওই দম্পতির সাহসিকতার জেরে রক্ষা পান এক তরুণী। একটি গাড়ি থেকে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার শুনে নীলাঞ্জনা ও দীপ নিজেদের গাড়ি থামান। তাঁরা দেখেন, পিছনের একটি গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে এক তরুণীকে। নীলাঞ্জনা ওই তরুণীকে বাঁচাতে গেলে গাড়িটি তাঁর পা পিষে দিয়ে বেরিয়ে যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: বারান্দায় মিলল প্রৌঢ়ের দেহ, মৃত্যু ঘিরে রহস্য

এর পরে দীপ ১০০ নম্বরে ডায়াল করলে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। উদ্ধার করা হয় সেই তরুণীকেও। তিনি পুলিশকে জানান, গাড়িটি অমিতাভ বসু নামে এক ব্যক্তির। তাঁর সঙ্গে গত ১ সেপ্টেম্বর আলাপ হয় তরুণীর। ওই দিন তাঁরা একটু বেরিয়েছিলেন এবং পাটুলির এক রেস্তরাঁয় গিয়েছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, রেস্তরাঁ থেকে তিনি বাড়ি ফিরতে চাইলেও অমিতাভ অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি জোর করে নামতে গেলে তাঁর যৌন হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।

তদন্তে নেমে বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে গাড়ির রং ও শেষ দু’টি নম্বর পায় পুলিশ। এ দিন পুলিশ যে গাড়িটি আটক করেছে, সেটির মালিক অভিষেককুমার পাণ্ডে। আর তাতেই ধন্দ বাড়ে পুলিশের। তাদের প্রশ্ন, ওই তরুণী কি অভিষেককেই অমিতাভ নামে চেনেন? না কি তাঁকে বাঁচাতে অমিতাভ নামটি বলেছিলেন? কারণ, পুলিশ অভিষেকের বাড়ির খোঁজ পেলেও অভিষেককে পায়নি। তবে তাঁর মা দাবি করেছেন, ওই তরুণীর সঙ্গে ছেলের পাঁচ বছরের আলাপ। এমনকি, তাঁদের বিয়ের কথাবার্তাও চলছিল!

আরও পড়ুন: গার্ডওয়ালে ধাক্কা মেরে খালে গাড়ি, মৃত্যু এক জনের

তা হলে তরুণী পুলিশকে কেন বললেন যে, ১ সেপ্টেম্বর তাঁদের পরিচয় হয়েছে? এই সব ধোঁয়াশা কাটাতেই পুলিশ ফের এ দিন দফায় দফায় ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর আগে তরুণী বলেছিলেন, তাঁর মোবাইল অভিযুক্তের গাড়িতে রয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ দিন সকালে তিনি পুলিশকে জানান, অভিযুক্ত তাঁর মোবাইল আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর কাছে দিয়ে গিয়েছেন। সেই ফোন হাতে পেয়ে পুলিশ দেখে, ওই তরুণীর

সঙ্গে অভিযুক্তের বেশ কিছু চ্যাট মুছে ফেলা হয়েছে। তরুণীর দাবি, অভিযুক্তই সেগুলি ডিলিট করেছেন। কিন্তু ফোন তো লক করা ছিল। অভিযুক্ত খুললেন কী করে? আপাতত এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এ দিন ওই তরুণীর মোবাইলে বার বার ফোন করা হলেও তিনি কেটে দেন। মেসেজ পাঠানো হলেও কোনও উত্তর দেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement