Rape case

জোড়াবাগানে ধৃত রক্ষীর তরফে দাঁড়ালেন না আইনজীবীরা

জোড়াবাগানে এক বালিকাকে যৌন নিগ্রহ করে খুনের ঘটনায় ধৃত রক্ষী রাম কুমারকে শনিবার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ পকসো এজলাসে তোলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:১৫
Share:

অভিযুক্ত: আদালতে রাম কুমার। শনিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

জোড়াবাগানে এক বালিকাকে যৌন নিগ্রহ করে খুনের ঘটনায় ধৃত রক্ষী রাম কুমারকে শনিবার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ পকসো এজলাসে তোলা হয়। অভিযুক্তের তরফে এ দিন কোনও আইনজীবী ছিলেন না। সরকারি আইনজীবীর সওয়াল শেষে বিচারক অভিযুক্তকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় জানান, এ দিন মামলার শুনানি রুদ্ধদ্বার কক্ষে (ইন ক্যামেরা) হয়েছে।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘এমন ঘটনা মানা যায় না। একটি নৃশংস খুন। ভাষা নেই কথা বলার। অভিযুক্ত ন’বছরের এক বালিকাকে ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতনের পরে যে ভাবে খুন করা হয়েছে, তা বিরলতম ঘটনা। সে কথাই আদালতে জানানো হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আশা করি, এ সব মামলার বিচারপর্ব দ্রুত শেষ হবে। আমরা আশাবাদী যে তাড়াতাড়ি চার্জশিট দেওয়া হবে। এই ধরনের মামলায় দ্রুত বিচারপর্ব শেষ হলে সমাজের কাছে অন্তত একটা বার্তা দেওয়া যাবে যে, এমন মামলায় কী হওয়া উচিত।’’

Advertisement

এ দিন দুপুরে মুখ ঢাকা অবস্থায় রাম কুমারকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। সরকারি আইনজীবী জানান, আদালত অভিযুক্তের কাছে তার বক্তব্য জানতে চায়। কিন্তু সে তেমন কিছু বলেনি।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, গত বুধবার রাতে ওই বালিকা জোড়াবাগান থানা এলাকায় তার মামার বাড়িতে গিয়েছিল। বাড়ির সামনের রাস্তায় সে বাচ্চাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছিল। খেলতে খেলতে কোনও ভাবে সে ওই চারতলা বাড়িতে লুকোতে যায়। এর পর থেকেই তার খোঁজ মিলছিল না। রাতে বালিকার পরিবারের তরফে জোড়াবাগান থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।

পুলিশ জানায়, সেই সময়ে ওই চারতলা বাড়ির রক্ষী, অভিযুক্ত রাম কুমার (৪০) তার ঘরে ছিল। অভিযোগ, এর পরে রাম বালিকাটির উপরে নির্যাতন চালায়। তাকে শ্বাসরোধ করে সে। মেয়েটি অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাকে ছাদে ওঠার সিঁড়ির চাতালে রেখে গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই বহুতল থেকে বালিকার দেহ উদ্ধার হয়। তার জেরে গোটা পাড়া রাগে ফুঁসতে থাকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনাস্থল থেকে বালিকার দাঁত ও চুল মেলে। ছাদে ওঠার সিঁড়ির মেঝে রক্তে ভরা ছিল।

ঘটনার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। আটক করে রামকে দফায় দফায় জেরা করায় সে দোষ স্বীকার করে বলে পুলিশের দাবি। যদিও এই ঘটনায় রামের সঙ্গে অন্য কারও জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগেই সরব হয়েছিল জোড়াবাগানের ওই পাড়া। আচমকা এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ পাড়ার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, অভিযুক্ত রাম এলাকায় লম্বু নামে পরিচিত। সে দীর্ঘদিন ধরে ওই পাড়ায় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কখনও কোনও অভিযোগ শোনা যায়নি। এমন একটি নৃশংস ঘটনায় সে গ্রেফতার হওয়ায় বিস্মিত, হতবাক পাড়ার লোকজনও।

বালিকার পরিবারের সদস্যেরা জানান, তাঁদের মেয়েকে ফেরত পাওয়া যাবে না ঠিকই। কিন্তু আর কারও পরিবারে যেন এমনটা না ঘটে। এই ধরনের অপরাধ করার আগে অপরাধী যাতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করে, তার জন্য ওই চারতলা বাড়ির রক্ষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাওয়া প্রয়োজন বলে জানান বালিকার পরিবারের লোকজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement