ডুবন্ত: এ ভাবেই খালে পড়ে যায় গাড়িটি। বুধবার, বাসন্তী হাইওয়েতে। নিজস্ব চিত্র
না ছিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, না ছিল ড্রাইভিং লাইসেন্স। সেই অবস্থাতেই অপটু হাতে লিজ়ে নেওয়া গাড়ি ছোটাতে গিয়ে বাসন্তী হাইওয়েতে মৃত্যু হয়েছে দীপক রানা নামে বছর সতেরোর এক কিশোরের। এমনটাই মনে করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে দীপকের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে দফায় দফায় তার সঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্যই জানা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রগতি ময়দান থানার তদন্তকারীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বাসন্তী হাইওয়ের চৌবাগা খালে নেমে গিয়েছিল বাজার থেকে উঠে যাওয়া পুরনো একটি গাড়ি। ওই গাড়িতে থাকা দুই কিশোরী এবং এক কিশোর জল থেকে নিজেরা উঠে আসতে পারলেও চালকের আসনে থাকা দীপকের খোঁজ মিলছিল না। পুলিশ প্রথমে জানায়, দীপক সম্ভবত দুর্ঘটনা ঘটিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পরে অবশ্য বাকিদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের ভুল ভাঙে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ ওই ঘটনাস্থলেই জলের নীচের পাঁক থেকে উদ্ধার হয় দীপকের দেহ।
এর পরে তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, ওই গাড়ির মালিক এক চিকিৎসক। দীপক ছাড়া ওই গাড়িতে অন্য যে কিশোর ছিল, তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং নানা সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে, গাড়িটি প্রায় ২০ বছরের পুরনো। চিকিৎসক সেটি বেশ কয়েক বছর আগে বিক্রি করে দিয়েছিলেন একটি গ্যারাজে। ওই কিশোর জানিয়েছে, গ্যারাজ থেকেই কয়েক দিন আগে গাড়িটি চালাতে লিজ়ে নেয় তারা। এ জন্য ৬০ হাজার টাকাও নিয়েছিলেন গ্যারাজের মালিক। তবে ১৫ দিন আগে গাড়িটি হাতে পেলেও তারা বুধবারই সেটি প্রথম বার করেছিল বলে দাবি ওই কিশোরের।
ওই কিশোর প্রথমে দাবি করেছিল, দীপকই গাড়িটি নিয়ে আসে। সে গাড়ির ব্যাপারে কিছুই জানত না। বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলেও এ ক্ষেত্রে এখনই কাউকে কাঠগড়ায় তুলে মামলা রুজু করতে পারছে না পুলিশ। আপাতত গাড়িটির সম্পর্কে আরও তথ্য এবং বুধবার ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। দীপকের বাবা মণিরাজ রানা এ দিন বলেন, ‘‘আমার ছেলের মৃত্যু সত্যিই দুর্ঘটনা কি না, সেটা পুলিশ খুঁজে বার করুক।’’