নথি পরীক্ষায় থাকবেন না সিভিক ভলান্টিয়ারেরা

পুলিশ সূত্রের খবর, জুনে শহরের রাস্তায় বেপরোয়া মোটরবাইক-আরোহীদের হাতে নিগৃহীত হন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া। তার পরেই পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বেপরোয়া গাড়ি ও বাইকের বিরুদ্ধে প্রতি রাতে বিশেষ অভিযান চালাতে বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৩
Share:

সিভিক ভলান্টিয়ার। ফাইল ছবি।

পরীক্ষা করার নামে সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ চালকদের থেকে টাকা আদায় করেন, এই অভিযোগ নতুন নয়। এমন অভিযোগ ওঠে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী ও কনস্টেবলদের একাংশের বিরুদ্ধেও। বুধবার দিঘায় এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এমন অভিযোগ এই প্রথম নয়। ফের এ নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হওয়ার কারণ কী? তার উত্তর না মিললেও বৃহস্পতিবার লালবাজার ফের জানিয়েছে, শহরের রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা শুধু ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মী এবং অফিসারদের সহযোগিতা করবেন। এর বাইরে কিছু নয়।

Advertisement

লালবাজারের খবর, ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে মনে করানো হয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা আইনভঙ্গকারী কোনও গাড়ি আটকাতে বা নথি পরীক্ষা করতে পারবেন না। তাঁরা ট্র্যাফিক কনস্টেবল বা সার্জেন্টদের সাহায্য করবেন।

পুলিশের নিচুতলার একাংশের অভিযোগ, বর্তমানে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে কনস্টেবল বা সার্জেন্টদের বদলে দেখা যায় গ্রিন পুলিশকর্মীদের। মূলত তাঁরাই আইনভঙ্গকারী গাড়িকে আটকানো থেকে শুরু করে সেগুলির নথি ট্র্যাফিক অফিসারদের কাছে পৌঁছে দেন। ওই পুলিশকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে কনস্টেবল বা সার্জেন্টদের অনুপস্থিতিতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, মধ্যমগ্রামে এক চালককে পিটিয়ে মারার অভিযোগও উঠেছিল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে।

Advertisement

যদিও কোনও অভিযোগই মানতে চায়নি লালবাজার। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, সব গার্ডকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বাহিনীর এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কোনও অফিসার বা পুলিশকর্মী রাস্তায় বেআইনি কিছু করেছেন, এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও ভাবেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে গাড়ির নথি পরীক্ষা করানো যাবে না। সেই কাজ করতে হবে কনস্টেবল এবং সার্জেন্টদের।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, জুনে শহরের রাস্তায় বেপরোয়া মোটরবাইক-আরোহীদের হাতে নিগৃহীত হন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া। তার পরেই পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বেপরোয়া গাড়ি ও বাইকের বিরুদ্ধে প্রতি রাতে বিশেষ অভিযান চালাতে বলেন। গত দু’মাসে নাকা তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৪০ হাজার আইনভঙ্গকারী চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাদ যাচ্ছেন না রাজনৈতিক নেতা থেকে পুলিশকর্মীরাও। পুলিশের একাংশের দাবি, এই অভিযানের কারণেই সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রী বুধবার ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প নিয়ে তোলাবাজির প্রসঙ্গ এনেছিলেন। কেন এত মামলা করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন।

তবে কি রাতের শহরে নাকা তল্লাশি বন্ধ হবে? পুলিশের ওই কর্তা স্পষ্ট জানিয়েছেন, সে সম্ভাবনা নেই। বেপরোয়া গতিতে ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো আটকাতে বাইক থেকে শুরু করে দামি গাড়ির চালক, কাউকেই যাতে ছাড়া না হয় সেই নির্দেশও জারি করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement