ছবি: সংগৃহীত
আমপানে কয়েক হাজার গাছ পড়েছে সল্টলেক এবং নিউ টাউন এলাকায়। ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় এড়াতে এ বার নেওয়া হল একগুচ্ছ পরিকল্পনা। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেন নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) আধিকারিকেরা। শুক্রবার, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ইকো পার্কে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে তাঁরা শুরু করলেন ‘রি-গ্রিন আর্থ’ কর্মসূচি।
এনকেডিএ সূত্রের খবর, নিউ টাউনে পাঁচ বছর অন্তর গাছ গণনা করা হয়। জিপিএসের মাধ্যমে গাছ শনাক্তকরণের ব্যবস্থাও রয়েছে। ২০১৮ সালের গণনা অনুযায়ী সেখানে ২২,৪৬০টি গাছ ছিল। ঝড়ে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, শিমুল, কদম, অর্জুন, পলাশ-সহ ৪,৬৪৭টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাঁচানো গিয়েছে ৮০ শতাংশ গাছ।
সবুজের পরিমাণ কী ভাবে বাড়ানো সম্ভব, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মূলত তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে খবর। কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে আলোচনা থেকে। প্রথমত, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে মাটির গুণমান পরীক্ষা করে কোথায় কী ধরনের গাছ লাগানো যেতে পারে, তা নিয়ে তৈরি করা হবে একটি সুসংহত মাস্টার-প্ল্যান।
দ্বিতীয়ত, নিউ টাউনে এখনও বহু ফাঁকা জমি রয়েছে। জমির মালিকেরা সেখানে কিছুই করছেন না। কোথাও পার্থেনিয়ামের ঝোপ, কোথাও আবর্জনা জমে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। তাই পরিকল্পনা করা হয়েছে, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া, বিজ্ঞান ক্লাব থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং এলাকাবাসীদের নিয়ে ওই জমিতে গাছ লাগানো হবে।
তৃতীয়ত, গাছ দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা হবে বাসিন্দাদের। এর ফলে প্রশাসনের পাশাপাশি নজরদারি বাড়বে স্থানীয়দেরও। এ ছাড়াও বৃক্ষরোপণ এবং গাছ ছাঁটাই সম্পর্কে কর্মীদের সবিস্তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বছরভর গাছের পরিচর্যা করা যায়।
এনকেডিএ-র এক কর্তা জানান, অফিস, আবাসন, বাজারের ছাদে বনসৃজনকে উৎসাহ দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। পাশাপাশি, নিউ টাউনে মাটির নীচ দিয়ে বিভিন্ন পরিষেবার পাইপলাইন গিয়েছে। সেগুলির জন্য যাতে গাছের শিকড়ের ক্ষতি না-হয়, সে দিকেও নজর দেওয়া হবে।
এ দিন বিধাননগর পুর ভবন চত্বরেও বৃক্ষরোপণ করা হয়। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ঝড়ে সাড়ে চার হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছে। সবুজ রক্ষা করতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।