ফাইল চিত্র।
বেআইনি মজুতদারি ঠেকাতে কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছিলেন জুট কমিশনার। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (আইজেএমএ)। এ বার সেই মামলায় পণ্যটির দামের যৌক্তিকতা-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাবে জুট কমিশনারের দফতর। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ ব্যাপারে হলফনামা দাখিল করতে হবে তাদের। পরবর্তী শুনানি ১৮ ফেব্রুয়ারি।
চটের বস্তার মূল উপাদান কাঁচা পাট। করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে উৎপাদন কম হওয়ায় বিগত দিনে তার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল। অথচ এ বছর অতিফলন সত্ত্বেও সেই দাম আগুন। তাতে লাগাম পরাতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তার ঊর্ধ্বসীমা কুইন্টাল প্রতি ৬৫০০ টাকায় বেঁধে দিয়ে নির্দেশ জারি করেন জুট কমিশনার। কিন্তু আইজেএমএ-র বক্তব্য, তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। বরং সরকারি দাম বেঁধে দেওয়ায় চটকল মালিকেরা বস্তার দাম পাচ্ছেন কম। জুট কমিশনারের নির্দেশ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে আইজেএমএ। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানি ছিল। তাতে অবশ্য আদালত জুট কমিশনারের নির্দেশ খারিজ করেনি। তবে কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করার সমস্ত দিক ব্যাখ্যা করে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জুট কমিশনারের দফতরকে।
আইজেএমএ-র অভিযোগ, দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার ফলে কাঁচা পাটের কালোবাজারি আদতে বেড়েছে। বাজারে ৭০০০-৭২০০ টাকার নীচে তা পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্র বস্তার দাম নির্ধারণ করছে জুট কমিশনারের বেঁধে দেওয়া দামের ভিত্তিতে। চটকল মালিকদের অভিযোগ, এর ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের। যার জেরে ইতিমধ্যেই ১৬টির মতো চটকল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক।
এ দিকে বেআইনি ভাবে মজুত করা কাঁচা পাট উদ্ধারের জন্য রাজ্যের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ ফের অভিযানে নামবে বলে খবর। পাশাপাশি, কাঁচা পাটের সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সম্প্রতি তা মজুতের ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে দিয়েছেন জুট কমিশনার। চলতি পাট মরসুমের প্রায় সাত মাস পার হয়ে গিয়েছে। জুট কমিশনারের দফতরের ধারণা, মজুতদারেরা আর বেশি দিন কাঁচা পাট লুকিয়ে রাখতে পারবেন না। তাই এই সময়ে চাপ দিয়ে আরও কিছু কাঁচা পাট বাজারে আনাই তাদের লক্ষ্য। তবে শিল্প মহলের একাংশের অভিযোগ, কয়েকটি বড় চটকলও কাঁচা পাট মজুত করছে। কিন্তু তাদের মজুতের পরিমাণ কমানোর ব্যাপারে কোনও নির্দেশ দেননি জুট কমিশনার।