স্বীকৃতি: সচিত্র পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে দীপক জোশী। বৃহস্পতিবার, নেপালে। নিজস্ব চিত্র
নেপালি ভাষায় কথা বললেই কি নেপালের নাগরিক হতে পারেন কেউ? গত নভেম্বরেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে থাকা দীপক জোশী ওরফে দুর্গাপ্রসাদ তিমসিনাকে প্রথমে নিজেদের নাগরিক হিসেবে মানতে অস্বীকার করেছিল নেপাল সরকার। শেষ পর্যন্ত নেপালের হ্যাম রেডিয়ো অপারেটরেরাই খুঁজে বার করেন তাঁর মা, নবতিপর ধনোমায়াদেবীকে। যিনি এত দিন ছেলে মৃত ভেবে তাঁর ছবিতে মালা দিতেন। দু’দশক জেলে থাকার পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত শনিবার জামিনে মুক্ত হন দীপক। পরদিন, রবিবার দুপুরেই নেপাল দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাঁকে পূর্ব নেপালের লুম্বক গ্রামে তাঁর মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। আর বৃহস্পতিবার নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে তাঁকে নেপালের অধিবাসী হিসেবে একটি সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
দীপক এখন একটু একটু কথা বলতে পারছেন। স্থানীয় কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁকে নিয়মিত গল্প বলে হাসিয়ে-কাঁদিয়ে মানসিক ভাবে সুস্থ করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানান নেপালের স্বরাষ্ট্রসচিব মহেশ্বর ন্যায়পানে। তাঁর খাওয়া বা থাকায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যেই দু’দেশের হ্যাম রেডিয়ো অপারেটরদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ফোন আসছে। খোঁজ নিচ্ছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা একাধিক সংস্থাও।
অন্য দিকে, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার রাজ্যের কারা বিভাগের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সংশোধনাগারের মানসিক ভাবে অসুস্থ বিচারাধীন বন্দিদের তালিকা তৈরি করে আদালতে তা বৃহস্পতিবারের মধ্যে পেশ করতে হবে। কিন্তু এ দিন সকালেই প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সেই নির্দেশের নোটিস এখনও না পাওয়ার কথা বলে আরও সময় চেয়ে আর্জি জানান। যা শুনে আগামী ৫ এপ্রিল সমস্ত তালিকা পেশ করার কথা বলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।