জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ময়লা ফেলার খোলা ভ্যাট পুরোপুরি সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তবে এখনই পুরোপুরি খোলা ভ্যাটমুক্ত হচ্ছে না শহর। কারণ, জাতীয় পরিবেশ আদালতের একটি নির্দেশিকা অনুযায়ী পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে দু’টি খোলা জায়গা চিহ্নিত করছে পুরসভা।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘বিল্ডিং সামগ্রী, গাছের ডাল ছাঁটাই ও নিকাশির পলি ফেলার জন্য ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে কমপক্ষে দু’টি খোলা জায়গা নির্ধারণ করা হচ্ছে। অনেক জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ওই সমস্ত সামগ্রী ফেলাও হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পুরসভা ওই সমস্ত জায়গাগুলির তালিকা আগামী দিনে পুর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। পাশাপাশি, মানুষকে সচেতন করতে পুরসভার তরফে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রচার চালানো হবে। যাতে ওই তিনটি সামগ্রী ছাড়া অন্যান্য সামগ্রী কেউ ওই সব খোলা ভ্যাটে না ফেলেন।’’
অভিযোগ, শহরের সংযুক্ত এলাকা (১০১ থেকে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড) ছাড়াও মূল কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে খোলা ভ্যাট এখনও রয়েছে। সেখানে বাড়ির পচনশীল সামগ্রী ফেলা হয়। বিশেষত বেহালা, ঠাকুরপুকুর ও গার্ডেনরিচ এলাকায় খোলা ভ্যাট থেকে এলাকায় রীতিমতো দূষণ ছড়ায় বলে অভিযোগ। নগরবাসীদের একাংশের আশঙ্কা, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো প্রতি ওয়ার্ডে দু’টি করে খোলা জায়গা রাখতে গিয়ে ফের সেখানে
পচনশীল সামগ্রী ফেলা হবে না তো? পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক আধিকারিকের অভিযোগ, ‘‘খোলা ভ্যাটে আবর্জনা ফেলার প্রবণতা সাধারণ মানুষের রয়েছে। তাই শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের দু’টি খোলা জায়গায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অন্যান্য সামগ্রী ফেললে বিপদ। এক্ষেত্রে যিনি বা যাঁরা ওখানে অন্য আবর্জনা ফেলবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে পুরসভাকে। নচেৎ জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানতে গিয়ে ফের খোলা জায়গায় গৃহস্থের ময়লা ফেলার কাজ শুরু হবে।’’
যদিও পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডে যে দু’টি খোলা জায়গা চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেগুলিতে ওই তিন রকমের সামগ্রী ছাড়া অন্য
ময়লা ফেললে অভিযুক্তকে জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পুরসভার তরফে লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হবে।’’ প্রসঙ্গত বিল্ডিং সামগ্রী, কাটা ডালপালা এবং নিকাশি পলি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কম্প্যাক্টর স্টেশনে প্রবেশ করতে পারে না। তার জন্যই প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে দু’টি জায়গা নির্ধারণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।