নিহত বিপাশা নস্কর। —ফাইল চিত্র
নরেন্দ্রপুরের খেয়াদহ হাসপাতাল মোড় এলাকায় এক তরুণীকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সকালে শ্বশুরবাড়ির বারান্দা থেকে বিপাশা নস্কর (২৬) নামে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। পণের দাবিতে বিপাশাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর বাড়ির লোক। ঘটনার পর থেকেই বিপাশার স্বামী স্বপন নস্কর ও শাশুড়ি চন্দনা নস্কর পলাতক ছিল। মঙ্গলবার সকালে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, বিপাশা নিজের ঘরে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশেরা কাছে ধৃতেরা দাবি করেছে। আরও দাবি, বিপাশাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু কোনও ডেথ সার্টিফিকেট না দেওয়ায় দেহটি বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরেই গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে তারা বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিল বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃতেরা। তবে দেহ উদ্ধারের পরে সোমবার পুলিশ জানিয়েছিল, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মারধর করে শ্বাসরোধ করার ফলেই বিপাশার মৃত্যু হয়েছে। ঠিক কারণ জানতে দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘বছর তিনেক আগে বিপাশার সঙ্গে এলাকারই চাল ব্যবসায়ী স্বপনের বিয়ে হয়েছিল। আইনত, বিয়ের সাত বছরের মধ্যে শ্বশুরবাড়িতে কোনও মহিলার মৃত্যু হলে বধূ হত্যার আইনে মামলা করা হবে। আত্মহত্যার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। সে ক্ষেত্রে ঘটনায় দায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের উপরেই বর্তায়। এই ঘটনার ক্ষেত্রেও ওই ধারায় মামলা করা হয়েছে। স্বামী ও শাশুড়ি মূল অভিযুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বিপাশার পরিবার আর্থিক ভাবে খুবই দুর্বল। একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁকে দেখে পছন্দ করেছিল চন্দনা ও স্বপন। কিন্তু বিয়ের মাস ছয়েক পর থেকেই পণের দাবিতে বিপাশার উপরে নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ। এ দিন বিপাশার মা পুষ্পবালা মণ্ডল বলেন, ‘‘বিয়ের সময়ে যথাসাধ্য পণ দিয়েছিলাম। তা-ও মেয়েটাকে মেরে ফেলল।’’